স্বাস্থ্যখাতে ঠিকাদার সিন্ডিকেটের গডফাদার হিসেবে পরিচিত মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে শেষ পর্যন্ত তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন,দুদক।
মাস্ক ও পিপিইসহ নিম্ন মানের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সরঞ্জম সরবরাহে দুর্নীতির ঘটনায় মিঠু ছাড়াও আরো ৪ জনকে তলব করা হয়েছে। এরা হলেন- জেএমআইয়ের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক ও তমা কনস্ট্রাকশনের সমন্বয়কারী (মেডিক্যাল টিম) মো. মতিউর রহমান, এলান করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আমিন, মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেডের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির। মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের চেয়ারম্যান ও লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনোক্র্যাট লিমিটেডের মালিক।
বুধবার কমিশনের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর স্বাক্ষরিত এক নোটিসে তাদের তলব করা হয় বলে দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এদের মধ্যে রাজ্জাক, মতিউর ও আমিনুলকে ৮ জুলাই এবং হুমায়ুন ও মোতাজ্জেরুলকে ৯ জুলাই সংশ্লিষ্ট নথিপত্রসহ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত গত ২০ বছর ধরে স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় মিঠুর নেতৃত্বে বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরের দুর্নীতিগ্রস্ত একটি চক্রের যোগসাজশে এই সিন্ডিকেটের ঠিকাদাররা একচেটিয়া কেনাকাটার দায়িত্ব পেয়েছে। আর এই সিন্ডিকেটের লুট করেছে শত শত কোটি টাকা।
মিঠুর প্রভাবে কেউই তার টিকিটি ছুঁতে পারে নি। সব সরকারের আমলেই প্রভাবশালীদের সঙ্গে লিয়াজো করে চলেছে। এমন কি দুদকেও তার সিন্ডিকেটের লোক রয়েছে এমন অভিযোগ রয়েছে।
তবে নানামুখি চাপে এবার দুদক আটঘাট বেধেই মাঠে নেমেছে। দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলি পুরো বিষয়টা তদারকি করছেন বলে জানা গেছে।
দুদকের নোটিসে বলা হয়, “স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার নিমিত্তে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ক্রয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে অন্যান্যদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বর্ণিত অভিযোগ বিষয়ে তাদের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।”
তারা নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হলে ওই অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই বলে গণ্য হবে উল্লেখ করা হয়েছে নোটিসে।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিইসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ১৫ জুন দুদক কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন শিবলীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে সংস্থাটি।