এক নজিরবিহীন ঘটনা। সুদূর নীলফামারী থেকে এক কিশোরী তার মাকে সঙ্গে নিয়ে হাইকোর্টে এসে ধর্ষণকারীর বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। বিচারকদের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘আমি ধর্ষণের শিকার। আমরা গরিব মানুষ, টাকা পয়সা নাই। আমি হাইকোর্টের কাছে বিচার চাই।’
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদদীনের হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার (১৫ জুন) সকালে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলে ওই কিশোরী তার মাকে নিয়ে ডায়াসের সামনে এসে দাঁড়ান। এ সময় আদালত তার কাছে জানতে চান কী হয়েছে? আপনি কে? আপনি কী বলতে চান? আপনার সঙ্গে উনি কে? তখন ওই কিশোরী হাইকোর্টকে নিজের পরিচয় দেন। বলেন, ‘আমার বয়স ১৫ বছর। উনি আমার মা। আমি ধর্ষণের শিকার। একজন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য আমাকে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু নীলফামারীর আদালত তাকে খালাস দিয়ে দিয়েছেন। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের টাকা পয়সা নাই। আমরা আপনার কাছে বিচার চাই।’
এসময় আদালত ওই কিশোরীর কাছে জানতে চান যে তার কাছে কোনো কাগজপত্র আছে কি না? ওই কিশোরী মামলার কাগজ আছে বললে আদালত উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখানে লিগ্যাল এইডের কোনো আইনজীবী আছেন? তখন আদালতে উপস্থিত থাকা লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী বদরুন নাহার দাঁড়ালে তাকে ওই কিশোরীর মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে নিতে নির্দেশ দেন।
পরে আইনজীবী বদরুন নাহার জানান, লিগ্যাল এইড থেকে কিশোরীর পক্ষে আপিল করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আগামী রোববার আপিল দায়ের করা হবে। এ দিকে বিচারিক আদালতে ন্যায় বিচার না পেয়ে হাইকোর্টে এক ধর্ষিতা কিশোরী সশরীরে হাজির হয়ে বিচার চাওয়ার ঘটনায় আইনজীবীরাও বিষ্মিত। তারা বলছেন বিচারপ্রার্থী কতো অসহায় হলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।