নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার ১৩ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টায় নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা জজ) জয়নাল আবদিন এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিন সকাল ১১টার দিকে পুলিশ আসামিদের আদালত নিয়ে আসে।
মামলার নথি অনুযায়ী, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে ঘরে ঢুকে ওই নারীর স্বামীকে অন্য কক্ষে বেঁধে রেখে আসামিরা তাকে নির্যাতন করেন। তারা নির্যাতন করার ভিডিওচিত্রও ধারণ করেন। এরপর ১ মাস ধরে গৃহবধূকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন—অনৈতিক প্রস্তাবের রাজি না হলে ভিডিওচিত্রটি তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন। ৩২ দিন পর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ভিডিওটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৪ অক্টোবর নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। ওই রাতেই গৃহবধূ বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর ৯ সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুসহ ১৪ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায়। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ৮ জন এবং এজাহারের বাইরের আসামি ৬ জন। গত ২৪ মার্চ মোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
আসামিদের মধ্যে নুর হোসেন বাদল, আবদুর রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাঈন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন সুমন কনট্রাকটর, নুর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও দেলোয়ার হোসেন দেলুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান পলাতক আছেন। তাদের অনুপস্থিতিতেই মামলার বিচার কাজ চলে।
এই মামলায় বাদীসহ ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।