ঢাকা   শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০   রাত ৩:২৩ 

সর্বশেষ সংবাদ

৬ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা : ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনের যাবজ্জীবন

সাভারের আমিনবাজারে ২০১১ সালে শবে বরাতের রাতে ছয় ছাত্রকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা মামলার রায়ে ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মামলার চার্জশিটভুক্ত মোট আসামি ৬০ জন। যাদের মধ্যে তিনজন বিচারকালে মারা গেছেন। তাই আদালত মামলায় ৫৭ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিত বাদে অপর আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন, আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বার, আব্দুল রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেপু, ইহর জমসের আলী, মির হোসেন, মজিবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, রজ্বব আলী, আলম, মোহাম্মদ রানা, আব্দুল হানিফ ও আসলাম মিয়া।
যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন, শহিন আলম, মো. ফরিদ খান, রাজিব, ওয়াসিম, ছাত্তার, নাজিম মিয়া, মনির হোসেন, আলমগীর, খাটা ইসলাম, অখিল খোন্দকার, বশির, রুবেল, নুর ইসলাম, শাহদাত হোসেন অরফে জুয়েল, টুটুল, মাসুদ, মোখলেস, ততন ও সাইফুল।
এর আগে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মামলার ৫৭ আসামির মধ্যে ৪১ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাদের রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়। এ মামলার বাকী আসামিরা পলাতক। গত ২২ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্কের শুনানির পর একই আদালত ২ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন। সেদিন এ মামলায় জামিনে উপস্থিত আমিন বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনসহ ৪১ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার অপর ১৬ আসামি পলাতক রয়েছেন। মামলায় ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৫৫ জন সাক্ষ্য দেন।
২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশি গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ম্যাপললিফের এ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শামীম (১৮), মিরপুর বাংলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ (২০), একই কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল (২১), উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র কামরুজ্জামান কান্ত (১৬), তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান (১৯) ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবির মুনিব (২০)।
ঘটনার পর নিহতদের বিরুদ্ধেই ডাকাতির অভিযোগ এনে গ্রামবাসীর পক্ষে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন আব্দুল মালেক নামে এক বালু ব্যবসায়ী। অন্যদিকে ছয় কলেজছাত্র হত্যাকাণ্ডে ৬০০ গ্রামবাসীকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন।
২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র‍্যাব সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ৬০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই বছরের ৮ জুলাই মামলার ৬০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) গঠন করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলালউদ্দিন।
চার্জশিটভুক্ত ৬০ আসামি হলেন- ডাকাতি মামলার বাদী আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বর, আব্দুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেফু, নিহর ওরফে জমশের আলী, মীর হোসেন, মজিবর রহমান, কবির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রজুর আলী সোহাগ, আলম, রানা, আ. হালিম, ছাব্বির আহম্মেদ, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন আনু, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নূর ইসলাম, আনিস, সালেহ আহমেদ, শাহাদাত হোসেন রুবেল, টুটুল, অখিল, মাসুদ, নিজামউদ্দিন, মোখলেছ, কালাম, আফজাল, বাদশা মিয়া, তোতন, সাইফুল, রহিম, শাহজাহান, সুলতান, সোহাগ, লেমন, সায়মন, এনায়েত, হায়দার, খালেদ, ইমান আলী, দুলাল , আলম, আসলাম মিয়া, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, হাতকাটা রহিম, মো. ওয়াসিম, সেলিম মোল্লা, সানোয়ার হোসেন, শামসুল হক ওরফে শামচু মেম্বার, রাশেদ, সাইফুল, সাত্তার, সেলিম ও মনির। আসামিদের মধ্যে কবির হোসেন ও রাশেদসহ তিনজন মারা গেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত