ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা ফেরতে নিষ্ক্রিয়তা কেন অ
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা দুই প্রতিষ্ঠান ও তিন পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
এবিষয়ে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ সোমবার রুল দেয়।
বাণিজ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের ব্যবস্থাপক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা শাখার (ডব্লিটিও) মহাপরিচালক, বিকাশ, নগদ, এসএসএল কমার্স, ফস্টার পেমেন্টস ও সূর্য পের প্রধান নির্বাহীকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাবরিনা জেরিন ও এম. আব্দুল কাইয়ূম লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
সাবরিনা পরে সাংবাদিকদের বলেন, “ই-কমার্স ব্যবসায় অনেক গ্রাহক বা ক্রেতা অনলাইনে অর্ডার বা বিনিয়োগ করেছেন। পণ্য না পেলে সেসব গ্রাহকের টাকা ফেরত পাওয়ার কথা। কিন্তু এ টাকাটা ফেরত আসেনি। ফলে গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাবেন কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
“এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও যেন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যে কারণে নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছিলাম। শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন।”
গত কয়েক মাস ধরে ই কমার্স প্রতিষ্ঠনে টাকা দিয়ে পণ্য না পাওয়া বা পণ্য দিয়ে দাম না পাওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতারিত হওয়ার নতুন নতুন ঘটনা প্রকাশ পাচ্ছে। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, কিউকম, আলেশামার্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনার মধ্যে ই-কমার্সে কেনাকাটায় গ্রাহক সুরক্ষায় গত জুলাই থেকে এসক্রো সার্ভিস চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ নিয়মের আওতায় পণ্যের অর্ডার করে গ্রাহকের দেওয়া অগ্রিম টাকা জমা থাকছে পেমেন্ট গেটওয়েতে। গ্রাহক পণ্য বুঝে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেই শুধু সেই টাকা ছাড় করা হচ্ছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে।
সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, গত জুলাইয়ের পর এসক্রো সার্ভিসে বা পেমেন্ট গেটওয়েতে ২১৪ কোটি টাকা আটকা আছে। কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। সমাধান করে এ টাকা ফেরতে কিছুটা সময় লাগবে।
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা বিকাশ, নগদ ও পেমেন্ট গেটওয়ে এসএসএল কমার্স, ফস্টার পেমেন্টস ও সূর্য পে- এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানে আটকে থাকা টাকা ফেরত দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে গত ২১ অক্টোবর কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষে হাই কোর্টে আবেদন করা হয়।
এর আগে গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা ফেরাতে গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সাত প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছিল।