অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান ও তার স্ত্রী হাসিনা বেগমের বিচার শুরু হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় রোববার ঢাকার ৩ নং জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হলো। একইসঙ্গে আগামী ২৭ অক্টোবর মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন আদালত।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, মামলার শুনানির সময় আব্দুল মান্নান খান ও তার স্ত্রী হাসিনা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে তারা জামিনে রয়েছেন।
২০১৪ সালের ২১ আগস্ট মান্নান খানের বিরুদ্ধে ৭৫ লাখ ৪ হাজার টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। মামলা দায়েরের তিন দিন পর ওই বছর ২৪ আগস্ট মান্নান খান ঢাকা সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
অন্যদিকে তার স্ত্রী হাসিনা সুলতানার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৫৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একই বছরের ২১ অক্টোবর মামলা করে দুদক। ওই বছর ২৩ অক্টোবর ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন হাসিনা সুলতানা।
২০১৫ সালের ১১ আগস্ট মান্নান খানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। চার্জশিটে মান্নান খানের অবৈধ সম্পদের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাতে দেখা যায়, তার আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৬৬ লাখ ৭ হাজার টাকা এবং তিনি সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার।
অন্যদিকে হাসিনা সুলতানার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৯ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। চার্জশিটে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামার তথ্যানুযায়ী পাঁচ বছর আগে আবদুল মান্নান খানের সম্পত্তি ছিল ১০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। কিন্তু এমপি হওয়ার পাঁচ বছরের ব্যবধানে সেটা ফুলে-ফেঁপে হয় ১১ কোটি তিন লাখ টাকা। আগে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল তিন লাখ ৮৫ হাজার টাকা। সেই আয় বেড়ে দাঁড়ায় বছরে তিন কোটি ২৮ লাখ টাকায়। পাঁচ বছরের প্রতিমন্ত্রিত্বকালে তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে ১০৭ গুণ। দুদকের তদন্তে বের হয়ে আসে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।
মান্নান খান তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় এক কোটি ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার ২২৭ টাকার উৎস দেখিয়েছিলেন মৎস্য চাষ থেকে; কিন্তু দুদকের তদন্তে, দোহার জয়পাড়া এলাকায় মান্নান খান বা তাঁর স্ত্রীর কোনো মৎস্য খামারের সত্যতা পায় নি।