অর্থ ও মানব পাচারের মামলায় কুয়েতের আদালতে দণ্ডিত লক্ষীপুর-২ আসনের সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বহাল রাখার রিট আবেদন খারিজ করে দেয়া হাই কোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
এছাড়া সংসদ সদস্য পদ বাতিলের পর লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপ নির্বাচনের তফসিল স্থগিতের রিট আবেদন খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনটিতে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
সংসদ সদস্য পদ বহাল রাখতে পাপুলের পক্ষে করা রিট আবেদন গত ৮ জুন সরাসরি খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।
ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডের কারণে পাপুলের সংসদ সদস্যপদ বাতিলের বৈধতা, লক্ষ্মীপুর-২ নির্বাচনী আসন শূন্য ঘোষণা এবং উপনির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি করেছিলেন তার বোন নুরুন্নাহার বেগম এবং পাপুলের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী শাহাদাত হোসেন।
হাই কোর্টে প্রাথমিক শুনানি শেষে আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেয়া হয়। এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হয়ে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আসে। সেখানে প্রধানবিচারপতির নেতৃত্বে বেঞ্চে শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেয়া হয়।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপনির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিল স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন করেন একাদশ সংসদ নির্বাচনে ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিএনপির প্রার্থী আবুল খায়ের ভূঁইয়া। শুনানি নিয়ে গত ১৪ জুন হাই কোর্ট এই রিট আবেদন খারিজ করে দেয়।
এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন আবুল খায়ের। এর শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ‘নো অর্ডার’ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যার্টনি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আবুল খায়েরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এইচ এম সানজীদ সিদ্দিকী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, অ্যার্টনি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “দুটি আবেদনের একটি আবেদন খারিজ করেছে, আরেকটিতে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণা ও উপনির্বাচনের তফসিল বৈধ এবং বহাল থাকল। ধার্য তারিখে নির্বাচন হতে বাধা নেই।”
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন পাপুল। পরে তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করিয়ে আনেন।
অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গত বছর জুনে কুয়েতে গ্রেপ্তার হন পাপুল। ওই মামলার বিচার শেষে গত ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের একটি আদালত।
সেদিন থেকেই পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে পরে গেজেট জারি করে সংসদ সচিবালয়। ওই আসনে উপনির্বাচনের জন্য ২১ জুন তারিখ ঘোষণা করে তফসিলও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশের কোনো আইনপ্রণেতার এভাবে বিদেশে দণ্ডিত হওয়া এবং সাজার কারণে পদ বাতিলের এটাই প্রথম ঘটনা।