স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে হাইকোর্টের বিচার কার্যক্রম। শারীরিক ও ভার্চ্যুয়াল দুই পদ্ধতিতেই বিচার চলবে। বুধবার থেকেই পুরোদমে শুরু হবে কার্যক্রম। এ জন্য প্রধানবিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন পৃথক বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। তবে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার পরিচালনায় মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা।
প্রধানবিচারপতি ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে ৩৫টি বেঞ্চ এবং শারীরিক উপস্থিতিতে ১৮টি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। সেগুলোতেই বিচারকাজ চলবে।
হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে হাইকোর্ট বিভাগে বেশ কয়েকটি বেঞ্চে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিচারকাজ চলে আসছে। এ অবস্থায় ৬ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা হয়। সভায় শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া (ভার্চ্যুয়াল) ও শারীরিক উপস্থিতি—এই দুই পদ্ধতিতে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকাজ চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই বুধবার সকাল সাড়ে দশটা হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শারীরিক উপস্থিতিতে নিয়মিত ১৮টি বেঞ্চে ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে ৩৫টি বেঞ্চে বিচারকাজ চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে । এতে বলা হয় ৩৫টি ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চের মধ্যে ২৪টি দ্বৈত ও ১১টি একক বেঞ্চ রয়েছে। আর শারীরিক উপস্থিতিতে ১৮টি নিয়মিত বেঞ্চের মধ্যে ১৩টি দ্বৈত ও ৫টি একক বেঞ্চ রয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার-ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে মিল রেখে গত ২৬ মার্চ থেকে আদালতেও ছুটি শুরু হয়। সাধারণ ছুটির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। বাড়ে আদালতের ছুটিও।
সাধারণ ছুটি চলাকালে ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার’ অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। ফলে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে বিচারকাজ পরিচালনার সুযোগ তৈরি হয়। এরপর ১১ মে থেকে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে আইনজীবীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অধস্তন সব আদালতে ৫ আগস্ট থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবে বিচারকাজ শুরু হয় ।
এ দিকে ১২ আগস্ট থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে হাইকোর্ট বিভাগে বিচার কাজ শুরু হলেও আইনজীবীসহ সবাইকে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশনা।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১২ আগস্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মামলা ও দরখাস্ত ফাইলিং এবং নকল সরবরাহের ক্ষেত্রে নিম্ন লিখিত নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো—
১. করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) উদ্ভুত পরিস্থিতির পূর্বের প্রচলিত নিয়ম অনুসারে সব প্রকারের মামলা ও দরখাস্ত ফাইলিং করা যাবে। ফাইলিং পরবর্তী এফিডেভিটকৃত মামলার নথি সংশ্লিষ্ট আদালতে দাখিলের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) উদ্ভুত পরিস্থিতির পূর্বের পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে।
২. ভার্চুয়াল কোর্টে মামলা ও দরখাস্ত শুনানির ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল শুনানির লিংক প্রেরণের জন্য ফাইলিংয়ের সময় সব মামলা ও দরখাস্তের ওপর নিয়োজিত আইনজীবীর ই-মেইল অ্যাডড্রেস উল্লেখ করতে হবে।
৩. ফাইলিং শাখায় ইতিমধ্যে দাখিলকৃত মামলা ও দরখাস্তের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) উদ্ভুত পরিস্থিতির পূর্বের প্রচলিত পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে।
৪. শারীরিক উপস্থিতি ও ভার্চুয়াল উভয় পদ্ধতিতে মামলা ও দরখাস্ত শুনানির জন্য করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) উদ্ভুত পরিস্থিতির পূর্বের প্রচলিত নিয়ম অনুসারে দৈনিক কার্যতালিকা প্রস্তুত ও প্রচারিত হবে।
৫. নকল শাখার স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান থাকায় শারীরিক উপস্থিতি ও ভার্চুয়াল উভয় পদ্ধতিতে পরিচালিত সব বেঞ্চ থেকে প্রদত্ত আদেশ এবং রায়ের নকল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)উদ্ভুত পরিস্থিতির পূর্বের প্রচলিত নিয়েমে সরবরাহ করা হবে।
আআ/শম