ঢাকা   শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১   রাত ১১:০০ 

Home Blog Page 3

রিজভীর বিরুদ্ধে হিরো আলমের ৫০ কোটি টাকার মানহানি মামলা,তদন্তে গোয়েন্দা পুলিশ

0

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
রিজভী ‘অর্ধপাগল ও অর্ধশিক্ষিত বলায়’ ৫০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে বলে আরজিতে দাবি করেছেন তিনি।
সোমবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে গিয়ে আইনজীবী আবদুল্লাহ মনসুর রিপনের মাধ্যমে এই মামলার আবেদন করেন ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম।
মহানগর হাকিম সাইফুল ইসলাম বাদীর জবানবন্দি শুনে গোয়েন্দা পুলিশকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন গোয়েন্দা পুলিশকে।
এর আগে রোববার রিজভীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন হিরো আলম। তবে মামলা না নিয়ে হিরো আলমকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন ডিবি কর্মকর্তারা।
ডিবি কার্যালয় থেকে রোববারই মামলা করতে আদালতের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন হিরো আলম। তবে আদালতে না গিয়ে পাশের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় গাড়িতে বসেছিলেন তিনি। সেখানেই আইনজীবীর সঙ্গে মামলার বিষয়ে পরামর্শ করেন। পরে সোমবার সকালে আদালতে এসে মামলার আবেদন করেন।
ডিবি কার্যালয়ে দেয়া অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ অগাস্ট সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও দেখেন হিরো আলম, যেখানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হাজারো জনতার সামনে বক্তব্যে তার প্রসঙ্গ টানেন।
“বক্তব্য প্রদানকালে বলেন যে, ‘হিরো আলমের মত একটা অর্ধ পাগল, অর্ধ শিক্ষিত, একটা লোক, সে নির্বাচন করছে, মানে রুচি কতটা বিকৃত হলে পরে এরা এ কাজ করতে পারে।”
হিরো আলম বলছেন, ওই ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তে ভাইরাল হয় ।
“আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ২০১৮ সালে বগুড়া-০৪ আসন থেকে এবং ২০২৩ সালে বগুড়া ০৪ আসন ও বগুড়া ০৬ আসন এবং ঢাকা ১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি । বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের চুলচেরা বিশ্লেষণে আমি একজন সুস্থ, নিবার্চন করার জন্য উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে তিনবার প্রমাণিত হয়েছি।
“তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে বিনোদন মূলক অনুষ্ঠান প্রচার করি। যাতে আমার অসংখ্যা ভক্তবৃন্দ আছে। বর্ণিত বক্তব্যের কারণে আমি হতাশা অনুভব করছি, আমার ভক্তবৃন্দের মাঝেও যথেষ্ট হতাশাসহ ক্ষোভ বিরাজ করছে।”
হিরো আলম লিখেছেন, “জনাব রুহুল কবির রিজভীর আক্রমণাত্মক মানহানিকর বক্তব্যের কারণে আমি মান-সম্মানহানিসহ সামাজিকভাবে চরম হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। উল্লেখ্য যে, বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে আমাকে নিয়ে কটূক্তি ও আক্রমণাত্মক মানহানিকর বক্তব্য প্রচারের মাধ্যমে অপমান-অপদস্থ করেছে ।
“তাছাড়া তার (রিজভী) এই অপমানকর/আপত্তিকর বক্তব্যের কারণে আমি বিএনপির নেতা/কর্মী তথা রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের হামলা/হয়রানির আশঙ্কা করিতেছি।”
হিরো আলমের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “আমি তো তার পক্ষে ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এই অভিযোগটাই মিথ্যা।
“২৪/২০ দিন আগে রাজশাহীতে দলীয় একটি কর্মসূচিতে বলেছিলাম যে, হিরো আলমের মতো একটা নিরীহ ছেলেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আঘাত করল। কেন? সে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরাফাতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন।”
রিজভী বলেন, “এখন ওই বক্তব্যকে হঠাৎ ভিন্নভাবে কালার দেয়ার জন্য এই অভিযোগ আনা হয়েছে। উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য একটাই, আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি ফেরানো।
“আমি মনে করি, এসব করে কোনো লাভ হবে না। আমরা জানতে পেরেছি, সরকারের এজেন্সিরা ডেকে এনে এসব কাজ করাচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, দেয়া হচ্ছে। সুতরাং সরকারের নির্দেশনায় আরো মামলা হলে তাতে আমরা ভীত নই।” বিডি নিউজ।

সুপ্রিম কোর্ট বারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হাতাহাতি, ভাঙচুর

0

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি হট্টগোল, ধস্তাধস্তি, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। 
বৃহস্পতিবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হট্টগোলের এক পর্যায়ে সমিতির সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর চালান বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। 
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের সাজার রায় নিয়ে সমিতির দক্ষিণ হলে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
এদিকে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আওয়ামীলীগ পন্থী আইনজীবীরাও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। দুপুর পৌনে ২টার দিকে মিছিল নিয়ে তারা সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে এলে সেখানে বিএনপিপন্থীদের মিছিলের মুখোমুখি হন।
পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে পরে তা রূপ নেয় ধস্তাধস্তিতে। এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সমিতির সম্পাদক আব্দুন নূর দুলালের কক্ষে ভাঙচুর চালান। তারা সম্পাদক ও সভাপতির কক্ষে সাঁটানো নেমপ্লেটও খুলে ফেলেন। 
এই হট্টগোল-ভাঙচুরের ঘটনায় এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দায়ী করছে। সমিতির সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল সাংবাদিকদের বলেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল, কায়সার কামাল ও গাজী কামরুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। পরে তারা সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনের পর সম্পাদকের কক্ষের সামনে দিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলাম।
এ সময় তারা (আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা) আমাদের এক নারী আইনজীবীকে হেনস্তা করেন। এর প্রতিবাদ করলে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা তেড়ে আসেন। এক পর্যায়ে তাদের কিছু আইনজীবী সম্পাদকের কক্ষের জানালা ভাঙচুর করেন। এখন তারাই আবার আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছেন।’ 
সংবাদ সম্মেলন থেকে কর্মসূচি ঘোষণা:
এর আগে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের সাজার রায়কে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘সরকার চলমান আন্দোলন ও গণতন্ত্রের সংগ্রাম বন্ধ করার হীন চক্রান্তে আদালতকে ব্যবহার করে একের পর এক ফরমায়েশি সাজা প্রদান করে চলেছে, যা দেশের কোনো মানুষ বিশ্বাস করে না।’
লিখিত বক্তব্যে কায়সার কামাল আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানাচ্ছে। সরকার বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচারকদের দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করছে। ফলে এ রায় আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।’ 
পরে সংবাদ সম্মেলন থেকে রায়ের বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা করেন এই বিএনপি নেতা। আগামী ৬ আগস্ট দেশের সব জেলা আইনজীবী সমিতিতে কালো পতাকা মিছিল এবং ৮ আগস্ট অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। সূত্র- কালের কণ্ঠ।

সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ, বৃটিশ হাইকমিশনারকে জানালেন আইনমন্ত্রী

0

সুষ্ঠু, অবাধ এবং ভায়োলেন্স ফ্রি নির্বাচন করার ব্যাপারে জনগণের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে বৃটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক-কে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে
আইন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে বৃটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সৌজন্য সাক্ষাতকালে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, বৃটিশ হাই কমিশনের গভর্নেন্স উপদেষ্টা মো. রফিকুজ্জামান, বৃটিশ হাই কমিশনের ২য় সেক্রেটারি ( রাজনৈতিক) ভেনেসা বিউমন্ট উপস্থিত ছিলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সারাহ কুক বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাই কমিশনার হিসেবে যোগ দেয়ার পর এটাই হচ্ছে আমার সাথে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ। তিনি যখন বাংলাদেশে ডিএফআইডির প্রধান ছিলেন তখন আমার সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল।

আনিসুল হক বলেন, সারাহ কুক বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরে অত্যন্ত খুশি। বাংলাদেশের উন্নয়নের ব্যাপারে আমাদের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে । হাই কমিশনার আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রাখবেন।

বাংলাদেশের আইনি অবকাঠামোর অনেক কিছুই ব্রিটিশ আইনের উপর নির্ভরশীল। এখন আইনের ক্ষেত্রে অনেক রকম উন্নয়ন হয়েছে এবং এটা কিভাবে আরও উন্নত করা যায়, সে ব্যাপারে পুরস্পর আলাপ-আলোচনা করেছি। আলোচনায় বাংলাদেশের জুডিশিয়াল অফিসার ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে ।

তারেক রহমানের সাজা নিয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তারেক রহমানের সাজার বিষয়ে হাই কমিশনারের সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি তথ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ করি এরপর আপনাদের জানাবো।

নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না, এ প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমার সাথে সেইভাবে কথা হয়নি।

বৃটিশ হাই কমিশনার আমাকে শুধু এ কথাই বলেছেন, তিনি খুব ইন্টারেস্টিং সময়ে বাংলাদেশে এসেছেন। আমি বলেছি, হ্যাঁ। এখন কম-বেশি আমাদের মনোযোগ হচ্ছে নির্বাচন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার একটি সুষ্ঠু, অবাধ এবং ভায়োলেন্স ফ্রি নির্বাচন করার ব্যাপারে জনগণের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ।
 

তারেকের ৯ বছর, জোবায়দার ৩ বছরের কারাদণ্ড, পৌণে ৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

0

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর এবং তারেকের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। একই সঙ্গে তারেকের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় তারেক রহমানের তিন বছর ও ২৭(১) ধারায় ৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। দুই ধারার সাজা এক সাথে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
আর দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় জোবায়দা রহমানকে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে তারেক-জোবায়দার মামলার রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন। এ মামলায় ৫৬ জনের মধ্যে ৪২ জন সাক্ষ্য দেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় তারেক ও জোবায়দার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলাটি করেন দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা। এতে তাদের বিরুদ্ধে ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া মামলায় তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয় ।
এরপর ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম। পরে এ মামলা থেকে সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এরআগে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বর্তমানে তারা পলাতক। ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল তারেকের বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। আর জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে তারেক রহমানকে সহযোগিতার অভিযোগে ১০৯ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

এসেনশিয়াল ড্রাগসে ৪৭৭ কোটি লোপাটের বিষয় অনুসন্ধান শেষে হাইকোর্টকে জানাতে নির্দেশ

0

সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল) ২০২০-২১ অর্থবছরের অডিট প্রতিবেদনে ৩২টি গুরুতর অনিয়মে সরকারি প্রায় ৪৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির ঘটনা দুদক বিধি অনুসারে অনুসন্ধান করতে পারবে।
অনুসন্ধান করে তা হাইকোর্টকে জানাতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জারি করা স্বতঃপ্রণোদিত রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এসেনসিয়াল ড্রাগসের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র এডভোকেট ড. কাজী আকতার হামিদ, মোতাহার হোসেন সাজু ও আবদুন নূর দুলাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
সিনিয়র এডভোকেট ড. কাজী আকতার হামিদ আদালতের আদেশের বিষয়টি বাসস’কে জানান।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনার পর গত ১২ মার্চ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন। এরপর দুদক অনুসন্ধান শুরু করে।
গত ১১ মার্চ দৈনিক পত্রিকাটিতে ‘দুর্নীতির আখড়া এসেনশিয়াল ড্রাগস সরকারি অডিটে ৩২ অনিয়ম, ৪৭৭ কোটি টাকা লোপাট’ শীর্ষক শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ এক সরকারি অর্থ লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। ক্যান্টিন বন্ধ। কিন্তু বিল তোলা হয়েছে ভর্তুকির। কাঁচামালের তুলনায় ওষুধের উৎপাদন কম দেখিয়ে করা হয়েছে তছরুপ। বিধি লঙ্ঘন করে টেন্ডার প্রদান। বিনা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ বাণিজ্য এমন কোনো অনিয়ম নেই যা হয়নি এখানে। এটি দেশের একমাত্র সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগ্স কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল)। শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এটি। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে সরকারি অডিটেই আর্থিক বড় দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের অডিট প্রতিবেদনে ৩২টি গুরুতর অনিয়মে সরকারি ৪৭৭ কোটি ৪১ লাখ ৯১ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবিরসহ ৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড

0

টাকা আত্মসাতের দায়ে সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন, সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জি এম ননী গোপাল নাথ, এজিএম সাইফুল হাসান ও কামরুল হোসেন খান , ডিজিএম সফিজ উদ্দিন আহমেদ, প্যারাগন প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা ও পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এদের মধ্যে হুমায়ন কবির, ননী গোপাল, সাইফুল হাসান, সাইফুল ইসলাম রাজা ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পৃথক দু’ধারায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায়ে তাদের প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ১০৩ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। যা প্রত্যেকের কাছ থেকে সমহারে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদায়যোগ্য হবে। এছাড়া প্রতারণার দায়ে তাদের আরও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে আসামি সফিজ উদ্দিন, কামরুল হোসেন ও মাইনুল হককে পৃথক ধারায় ৮ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের দায়ে তাদের প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ১০৩ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। যা প্রত্যেকের কাছ থেকে সমহারে রাষ্ট্রের অনুকূলে আদায়যোগ্য হবে। এছাড়া প্রতারণার দায়ে তাদের আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা কারাদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এছাড়া আসামি ডিজিএম আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষনার আগে তিন আসামি মাইনুল হক, সফিজ উদ্দিন ও কামরুল হোসেনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দণ্ডিত অপর ৫ আসামি পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, দুই কোটি ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ১০৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারি পরিচালক একরামুল হক চৌধুরী রমনা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২২ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ- পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ।
২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৫৫ জনের মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বাসস।

বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমের ১০ বছরের কারাদণ্ড

0

মানি লন্ডারিং মামলায় বিতর্কিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের ১০ বছরের এবং তার সাত সহযোগির ৪ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদন্ডের পাশাপাশি আসামিদের ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৪ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধ না করলে তাদের আরও এক বছর কারাভোগ করতে হবে।
চার বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মোরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আনিছুল ইসলাম।
এরআগে ১৫ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৫ জুন দিন ধার্য করেন। গত ২৫ জুন মামলার রায় ঘোষণা ও অধিকতর যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন আসামি পক্ষের আইনজীবী অধিকতর যুক্তি উপস্থাপন করেন। এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মামলার রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ৭জন সশস্ত্র দেহরক্ষীসহ জি কে শামীমকে তার কার্যালয় থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। নিকেতন এ-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাড়িতে তার অফিসে র‌্যাব দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। তার কার্যালয় থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।
এরপর জি কে শামীমের বিরুদ্ধে র‌্যাব বাদি হয়ে তিনটি মামলা করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবু সাঈদ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট আদালতে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ২৬ জনের মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শামীম তার দেহরক্ষীদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে নিজ নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে আসছিলেন। বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় টার্মিনাল, গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন।
মামলা তদন্ত সূত্রে জানা যায়, জি কে শামীম ও তার পরিবার বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত রেখেছে। এছাড়া আসামি যেকোনো সময় মজুত করা অর্থ হস্থান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রক্রিয়া নিতে পারে। মামলার সুষ্ঠু-তদন্তের স্বার্থে অপরাধলব্ধ আয় সংক্রান্ত ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। আসামির অপরাধলব্ধ আয় অবরুদ্ধ না হলে ব্যাংক হিসাবে জমা করা অর্থ হস্থান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে আইনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে। ওই হিসাবগুলোতে কয়েকশ’ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানা যায়।বাসস।

মামলাজটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হবো : প্রধান বিচারপতি

0

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ১৯৭১ সালে রক্ত দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছি। যদি যুদ্ধ করে এ ভূখন্ড স্বাধীন করতে পারি, তাহলে মামলাজটের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে জয়ী হবো। এটি আমরা পরিশ্রম করে অর্জন করতে চাই।
বৃহস্পতিবার ঢাকার জেলা জজ আদালতে প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিতব্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’-এর ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালতগুলোতে অনেক মামলা জমে গেছে। এ মামলার জট যেভাবেই হোক ছাড়াতে হবে। অন্যথায় দেখা যাবে যে, বিচারিক সেবা পেতে এ দেশের মানুষ হকদার, সেখান থেকে তারা বঞ্চিত হবেন।
তিনি বলেন, আমি বিচারকদের নির্দেশ দিয়েছি, আপনারা পরিশ্রম করে এখন যেসব কেস ফাইলিং হচ্ছে, তার থেকে নিষ্পত্তি যাতে বেশি হয় সেটি নিশ্চিত করুন। ১২০টি কেস নতুন ফাইলিং হলে যদি পুরনো ১২৫টি নিষ্পত্তি হয়, তাহলে ৫-৬ বছরের মধ্যে মামলাজট কমে আসবে। এখন যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, সেখান থেকে বিচারপ্রার্থীদের বের করে আনতে পারবো। আদালতের বারান্দায় মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বিচার পাওয়ার জন্য তাদের ঘুরতে হবে না। তাদের ন্যায়বিচার ও হয়রানি লাঘব নিশ্চিত হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এ ন্যায়কুঞ্জ তাদের জন্য, যারা এখানে বিচার পেতে আসেন, তাদের বিশ্রাম নেয়ার জন্য। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। আমরা সারাদেশের আদালতগুলোতে এ ধরনের ন্যায়কুঞ্জ স্থাপন করছি।’
এর আগে প্রধান বিচারপতিকে স্বাগত জানান ঢাকার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া, মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাশফিকুল ইসলাম ও ঢাকার বিচার বিভাগীয় অন্যান্য কর্মকর্তারা।
এ সময় প্রধান বিচারপতির সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্টার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, আপিল বিভাগের রেজিস্টার মো. সাইফুর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার (বিচার) এস কে এম তোফায়েল হাসান ও প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব মো. আরিফুল ইসলাম।

উজারা জেয়া দেখা করে ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার: অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার

0

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ সময় মার্কিন প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে ছিলেন—দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য-এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেন। অন্যদিকে মার্কিন প্রতিনিধি দল বলছে, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে প্রতিশ্রুতি আছে, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তা করতে তাঁদের ভিসা নীতি।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সাক্ষাতে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি, রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়।
সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করা তাঁর অঙ্গীকার। সব সময় বলে আসছি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা করেছি, আগেও করেছি।’

ছাত্র জীবন থেকে তিনি এবং তাঁর পরিবার সব সময় মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। জনগণ তাঁদের প্রতিনিধি বাছাই করবে।’
জনগণের এই অধিকার আদায়ে সব সময় তাঁর দল সংগ্রাম করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি অতীতে বিএনপি কীভাবে ভোট কারচুপি করেছে। আমরা সংগ্রাম করে সেটি পরিবর্তন করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এটা আমরা চালু করেছি।’
বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি ও তাঁদের মিত্রদের নৃশংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অগ্নি সন্ত্রাসে ৫০০ জন নিহত হয়েছেন।
বিভিন্ন সময় হামলার শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। সেখানে নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা মানবপ্রাচীর তৈরি তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছিল।
বাংলাদেশের ওপর আরোপিত মার্কিন ভিসা নীতি প্রসঙ্গে উজরা জেয়া বলেন, ভিসা পলিসি হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও প্রতিশ্রুতি আছে, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তা করতে এই ভিসা নীতি।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, কোনো দলের প্রতি তাঁদের পক্ষপাতিত্ব নেই। তাঁরা একটা নিরপেক্ষ, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চান।
সাক্ষাতে রোহিঙ্গা বিষয়ে কথা বলেন উজরা জেয়া। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি।
রোহিঙ্গাদের তাঁদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিচালন ব্যয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে বলে জানান উজরা জেয়া। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের দুটি এলাকায় বর্তমানে ১ মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানব পাচার, অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছে, যেটি বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। শ্রমিক ইস্যুতে আলোচনাকালে তিনি বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এক সঙ্গে কাজ করবে এবং বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মালিকদের চাপ দিয়ে শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়িয়েছেন।
সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান।

সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হবে: উজরাকে জানালেন আইনমন্ত্রী

0

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে কথা হয়েছে। আমি জানিয়েছি, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধন করা হবে।’
মন্ত্রী আনিসুল হক আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। এর জন্য যে আইনের অবকাঠামো আছে, তা তাদের অবহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখন যেকোনো অপরাধ তদন্ত করে সবকিছুর সুষ্ঠু বিচার হয়। বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি নেই। গাজীপুরের শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে তাদের কনসার্ন জানিয়েছে। বিষয়টি দেখা হবে।’
গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকায় আসেন উজরা জেয়া। তাঁর সঙ্গে এই সফরে আরও এসেছেন দেশটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উজরা জেয়ার বাংলাদেশ সফরে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় আসবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার, শ্রম সম্পর্কিত বিষয়, মানব পাচার ও রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন দিক। মত প্রকাশ ও সংগঠন গড়ার স্বাধীনতা, নারীর অধিকার, প্রান্তিক ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর অধিকার সম্পর্কেও মার্কিন প্রতিনিধিদলটির অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলার কথা ছিল।