ঢাকা   বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১   দুপুর ১:১২ 

Home Blog Page 165

শুদ্ধাচার পুরস্কার পাচ্ছেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ সরকার

0

তথ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থা প্রধানদের মধ্য থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার পাচ্ছেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ‍সুরথ কুমার সরকার।

শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান নীতিমালা অনুযায়ী প্রধান তথ্য কর্মকর্তাকে শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

প্রধান তথ্য কর্মকর্তার সঙ্গে ‍তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-১) মোহাম্মদ গোলাম আজম এবং অফিস সহায়ক মো. আব্দুল আলীম চলতি অর্থবছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার পাচ্ছেন বলে সোমবার এক সরকারি তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়েছে।

২০১৯ সালের ২৭ জুন থেকে প্রধান তথ্য কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সুরথ কুমার বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৮৪ সালের বিসিএস ব্যাচের তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা সুরথ কুমার জাতীয় সংসদ সচিবালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ড, তথ্য অধিদপ্তর এবং গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১২ সালে সরকার জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করে, যার মূল লক্ষ্য হল শুদ্ধাচার চর্চা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

এর ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেতৃত্বে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম-পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিবীক্ষণ কাঠামো প্রণয়ন করছে।

২০১৭ সালে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান নীতিমালা প্রণয়ন করার পর শুদ্ধাচার পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

আগুনে পুড়ে ৫ রোগীর মৃত্যুঃ ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে ইউনাইটেড হাসপাতালকে সমঝোতায় আসতে বলেছে হাইকোর্ট

0

রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুন লেগে পাঁচ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে ‘সমঝোতায়’ আসতে বলেছে হাই কোর্ট। খবর বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

এ সংক্রান্ত তিনটি রিট আবেদন একসঙ্গে শুনে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়। 

আগামী ১৩ জুলাই বিষয়টি পরবর্তী আদেশের জন্য রেখে তার আগেই ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে সমঝোতা সেরে ফেলতে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলাটির তদন্তও দ্রুত শেষ করতে বলেছে আদালত।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক, হাসান এম এস আজিম ও মুনতাসির আহমেদ।

ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান খান ও তানজীব উল আলম।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে আদালতে যে তিনটা প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তাতে ইউনাইটেড হাসপতালের ‘অবহেলা’ স্পষ্ট।

“তাই ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আগামী ১২ জুলাইয়ের মধ্যে দুই পক্ষকে, মানে যারা মারা গেছে তাদের পরিবার এবং ইউনাইটেড হাসপাতালকে সমঝোতায় আসতে বলেছে আদালত। না হলে ১৩ জুলাই আদালত আদেশ দেবে।”

ইউনাইটেড হাসপাতালের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও ইউনাইটেড হাসপাতালকে ওই ঘটনার প্রতিবেদন দিতে বলেছিল আদালত। সে অনুযায়ী চারটি প্রতিবেদনই জমা পড়েছে।

“আজকে সেগুলো উপস্থাপন করা হয়। পুলিশ ও রাজউকের প্রতিবেদন নিয়ে আবেদনকারীদের আইনজীবীরা বলেছেন, আইসোলেশন ইউনিটের জন্য বাড়তি যে স্ট্রাকচার করা হয়, সেটার কোনো অনুমোদন ছিল না। বলা হয়, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। ফলে প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে যে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল।

“আমরা আমাদের প্রতিবেদনে বলেছি, এ ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতালের কোনো রকম গাফিলতি ছিল না। ইউনাইটেড একটি জেনারেল হাসপাতাল, যদিও এখানে বিশেষায়িত সুবিধাও আছে। কিন্তু ছোঁয়াচে রোগ, বিশেষ করে বায়ুবাহিত সংক্রামক ব্যাধির জন্য আইসোলেশন ফেসিলিটিজ বাংলাদেশের কোনো প্রাইভেট হাসপাতালে নাই।

আগুনে পুড়ে যাওয়া গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনাভাইরাস ইউনিট। বুধবার রাতের অগ্নিকাণ্ডে সেখানে চিকিৎসাধীন পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

“ইউনাইটেড হাসপাতাল সরকারের অনুরোধে জুরুরি ভিত্তিতে এই ব্যবস্থাটা তৈরি করেছিল। এই জরুরি পরিস্থিতি তাৎক্ষণিক মোকাবেলা করার জন্য। মার্চ এপ্রিলের দিকে অফিস খোলা ছিল না, সে কারণে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এখানে নেওয়া যায়নি। কিন্তু ইউনাইটেড হাসপাতাল সবসময়ই এসব কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়। বিশেষ একটা পরিস্থিতির কারণে আমরা সেটা নেওয়ার সুযোগ পাইনি।”

এই আইনজীবী বলেন, হাসপাতালের ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে।

“ওই সময় কন্ট্রাকটরদের সার্ভিসিং করে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে তারা সেটা করার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করে। ক্লোজড সার্কিড ক্যামেরায় দেখা গেছে, দেড়-দুই মিনিটের মধ্যে ওই দুঘর্টনাটা ঘটেছে। সুতরাং এটা দুর্ঘটনা ছাড়া কিছুই না।”

এ আইনজীবী বলেন, যিনি ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট আবেদন করেছেন তাকে জিজ্ঞাস করা হয়েছিল ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষের কাছে সরাসরি তিনি ওই ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন কিনা।

“তিনি বলেছেন, ইউনাইটেড হাসপাতালকে চিঠি দিয়ে তিনি ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আলোচনায় বসার কথা বলেছেন। তবে কোনো অঙ্কের ক্ষতিপূরণ সেখানে চাননি। এই নিরিখে কোর্ট বলেছে যে, আপনারা আলোচনায় বসেন। আলোচনায় এটা নির্ধারণ করা সম্ভব। ১২ জুলাইয়ের মধ্যে চেষ্টা করেন। যদি না পারেন তাহলে ১৩ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য রাখলাম।”

আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, “আউট অব কোর্ট আমরা একটা সেটেলমেন্টে যেতে পারব বলে মনে করি। যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে আমরা ১৩ তারিখ পরবর্তী আদেশের অপেক্ষায় থাকব।” 

১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করেছেন ওই ঘটনায় নিহত রিয়াজুল আলমের স্ত্রী ফৌজিয়া আক্তার।

তার আইনজীবী হাসান এমএস আজিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেহেতু সবার প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে ইউনাইটেড হাসপাতালের দায় আছে, সব কর্তৃপক্ষই সেটা বলেছে…, সুতরাং ইউনাইটেডই যেন ভিকটিমদের পরিবারের লোকজনদের সাথে আলোচনা করে ক্ষতিপূরণ দেয়, সেটা আদালত বলেছে।”

ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে সরাসরি ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন কিনা জানতে চাইলে এ আইনজীবী বলেন, “আমরা আগেই একটা আবেদন করেছিলাম। তখন তারা বলেছিল যে, রিয়াজুল আলমের স্ত্রী, মানে ফৌজিয়া আক্তারকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চাকরি দেবে আর বাচ্চাকে ইউনাইটেড স্কুলে পড়াবে।

“এটা খুবই অমানবিক আচরণ। উনার স্বামীকে মেরে উনাকে ওইখানে চাকরি দেবে। এটা কি হতে পারে?”

আগুনে পুড়ে যাওয়া গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনাভাইরাস ইউনিটটি বৃহস্পতিবার পরিদর্শন করেন সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা। বুধবার রাতের অগ্নিকাণ্ডে সেখানে চিকিৎসাধীন পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হয়।

গত ২৭ মে রাত পৌনে ১০টার দিকে গুলশানের বেসরকারি ওই হাসপাতালটির নিচের প্রাঙ্গণে করোনাভাইরাসের রোগীদের জন্য স্থাপিত আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লাগলে একটি কক্ষে পাঁচ রোগীর মৃত্যু ঘটে। তাদের মধ্যে তিনজনের কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিল।

নিহতরা হলেন মো. মাহবুব (৫০), মো. মনির হোসেন (৭৫), ভারনন অ্যান্থনি পল (৭৪), খোদেজা বেগম (৭০) ও রিয়াজ উল আলম (৪৫)।

ওই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন এবং নিহতদের পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ মে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব ও শাহিদা সুলতানা শিলা।

আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া মো. মাহবুব এলাহী চৌধুরীর ছেলে আননান চৌধুরী এবং ভারনন অ্যান্থনি পলের ছেলে আন্দ্রে ডোমিনিক পলও পরে সেই রিটের বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

এরপর গত ২১ জুন রিয়াজুল আলমের স্ত্রী ফৌজিয়া আক্তার ১৫ কোটি ক্ষতিপূরণ চেয়ে আলাদা একটি রিট আবেদন করেন। তাতে এক কোটি টাকা অন্তবর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়।

এছাড়া এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত চেয়ে ১ জুন আরেকটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী রেদওয়ান আহমেদ ও হামিদুল মিসবাহ। কেন বিচারিক তদন্ত করা হবে না- সে বিষয়ে রুলও চাওয়া এ রিটে।

গত ২ জুন প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১৪ জুনের মধ্যে ঘটনার প্রতিবেদন দিতে বলে হাই কোর্ট। সে অনুযায়ী প্রতিবেদন দাখিল করা হলে সোমবার তা উপস্থাপন করা হয়।
পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনে ইউনাইটেড হাসপাতালের গাফিলতির কথা রয়েছে। রাজউক বলছে, করোনাভাইরাসের জন্য আলাদা করে আইসেলেশন ইউনিট করার অনুমতি নেয়নি ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ।
ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডের সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিলে রোগীদের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হত। তাছাড়া হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ।

এমপি পাপলু’র গ্রেপ্তারের বিষয়টি বাংলাদেশকে জানাচ্ছে না কুয়েত, সংসদকেও অবহিত করা হয়নি, বাতিল হতে পারে সব সম্পদ

0

একজন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অথচ তা বাংলাদেশ সরকারকে অবগত করার প্রয়োজনবোধ করছে না কুয়েত সরকার। বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও যোগাযোগ করে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি কুটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে মনে করা হচ্ছে।
লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপলুকে গত ৬ জুন মানবপাচার ও বিভিন্ন জালিয়াতির অভিযোগে কুয়েতের মুশরিফ আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের সিআইডি। গ্রেপ্তারের পর তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং ১৬ জুন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে এবং এখন বিচার শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে দেশের বাইরে একজন সংসদ সদস্য গ্রেপ্তার হয়ে জেলে থাকলেও সংসদকে তা জানানো হয় নি। এ নিয়ে কোনো বিবৃতিও দেয়া হয় নি।
কুটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা, মনে করেন বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি কুটনৈতিকভাবে জানানোর দায়িত্ব ছিল কুয়েতের। কুয়েতে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে। তারা দূতাবাসকে জানাতে পারতো।
এমপি পাপলু গ্রেপ্তারের বিষয়টি কুয়েতের সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। পরবর্তিতে কুয়েতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু ১৫ দিনেও কুয়েত কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানানোর প্রয়োজনবোধ করছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কুয়েত বাংলাদেশকে পাত্তাই দিচ্ছে না।
কয়েকজন কুটনৈতিক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করলে তারা বলেন, কুয়েত বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ১৫ দিনেও না জানিয়ে কুটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের উচিত, কুয়েতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এর ব্যাখ্যা চাওয়া।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন সাধারণ নাগরিকও বিদেশে কোনো অপরাধ করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হতেই পারে। কিন্তু বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে জানানোর নিয়ম রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংসদ সদস্য দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী রাষ্ট্রে তার অবস্থান ১২ নম্বরে। অর্থাৎ মন্ত্রীপরিষদ সচিব,তিন বাহিনীর প্রধানের সমমর্যাদায়। এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে কোনো দেশ গ্রেপ্তার করলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশকে জানানোর নিয়ম যেমন রয়েছে তেমনি এটা ভদ্রতাও। কিন্তু কুয়েত নিয়মও মানে নি,ভদ্রতাও দেখায় নি। এটা সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিও অসৌজন্যমূলক আচরণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন অপরাধ করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বিচার হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গ্রেপ্তারকৃতব্যক্তির নিজ দেশকে যেমন বিষয়টি জানাতে হবে তেমনি তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। যা কুয়েত করছে না।
এদিকে বাংলাদেশ এখন সংসদ অধিবেশন চলছে। নিয়ম অনুযায়ী সংসদ চলা অবস্থায় দেশের ভেতর কোনো সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে হলে স্পিকারের অনুমতি নিতে হয়। তবে এমপি পাপলু গ্রেপ্তার হয়েছেন দেশের বাইরে। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীও জানেন। কিন্তু বিষয়টি সংসদকে অবহিত করা হয় নি। স্পিকার যেমন অবহিত করেন নি তেমনি কোনো সংসদ সদস্যও পয়েন্ট অব অর্ডারে বিষয়টি জানতে চান নি। এমন কি এমপি পাপলুর স্ত্রী সেলিনা ইসলাম নিজেও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য। তিনিও বিষয়টি সংসদে জানান নি বা জানতে চাননি।
এমপি পাপলুকে ৮ দিনের রিমান্ড শেষ গত মঙ্গলবার কারাগারে পাঠিয়েছে কুয়েতের আদালত। সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করছে এবং শিগগিরই আদালতে বিচারকাজ শুরু হবে। কুয়েতের আইন অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধীদের অপরাধ প্রমাণ হলে ৭ থেকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। বাতিল হতে পারে কুয়েতে তার সব সম্পদ, ব্যবসা বাণিজ্য। পাপলুর বিরুদ্ধে মানব পাচার, মুদ্রা পাচার, ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

কুয়েতে গ্রেপ্তার এমপি পাপলুর হতে পারে ১৪ বছরের জেল,রিমান্ড শেষে কারাগারে; স্ত্রী, কন্যা,শ্যালিকার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

0

মানব পাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপলুকে কারাগারে পাঠিয়েছে কুয়েতের আদালত। দেশটির সিআইডি ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হয় এবং কারাগারে পাঠায়৷ কুয়েতের সংবাদ মাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী এখন সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করলেই আদালতে বিচারকাজ শুরু হবে। কুয়েতের আইন অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধীদের অপরাধ প্রমাণ হলে ৭ থেকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। পাপলুর বিরুদ্ধে মানব পাচার, মুদ্রা পাচার, ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে দেশে এমপি পাপলুর স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা এমপি সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, সেলিনার বোন জেসমিনকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
কুয়েতের সংবাদ মাধ্যম আরব টাইমস ও সূত্রগুলো জানিয়েছে, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে কুয়েতের সমাজকল্যাণ ও অর্থনীতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মরিয়ম আল আকিল জনশক্তি কর্তৃপক্ষের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে তিন মাসের জন্য বরখাস্ত করেছেন। এই কর্মকর্তা বাংলাদেশের কাজী শহীদের অনৈতিক কাজের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তদন্তের স্বার্থে তাকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছিল সিআইডি। পাপলুর প্রতিষ্ঠান থেকে কুয়েতের যেসব কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়া হতো এই কর্মকর্তা তাদের একজন। জিজ্ঞসাবাদে পাপলু স্বীকার করেছেন, কাদের কাদের তিনি ঘুষ দিতেন। সে অনুযায়ী সিআইডি এদের গ্রেপ্তার করা শুরু করেছে বলে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। মানবপাচারসহ বিভিন্ন জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এমন শতাধিক ব্যক্তির তালিকা করেছে কুয়েতের সিআইডি, দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ। সেই তালিকা ধরেই এদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পাপলুর ঘটনায় কুয়েতে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ঃ এদিকে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষীপুর -২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপলুর স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। কুয়েতে পাপলু গ্রেপ্তারের পর গত ৯ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন( দুদক) এমপি পাপলু, তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম , তাদের মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিনের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টিআইএন নম্বার, আয়কর রিটার্নসহ ব্যক্তিগত সব নথি তলব করে। এবার তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে এ জন্য গত মঙ্গলবার পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)’র ইমিগ্রেশন বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন চিঠি দিয়ে এই অনুরোধ জানান। দুদক সূত্র জানিয়েছে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। তারা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দুদকের কাছে খবর রয়েছে। তারা যাতে দেশ ছাড়তে না পারে এ জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য মানবপাচার ও বিভিন্ন জালিয়াতির অভিযোগে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে পাপলুকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের সিআইডি।

নিম্নমানের অনুষ্ঠান মানুষ দেখবে কেনো? বেসরকারি টিভি যাচ্ছে কোথায়?

0

শংকর মৈত্রঃ ১ লাখ টাকা খরচ করে নাটক বানিয়ে ৩ লাখ টাকা লাভ করতে চাইবেন, বস্তাপচা সংলাপ, নাটকের থাকেনা আগামাথা, নেই কোনো ম্যাসেজ, অভিনয়ের নামে ভাঁড়ামি এসব মানুষ দেখবে কেনো? মানুষ কি এতোই বোকা এ বিশ্বায়ণের যুগে?
১০ হাজার টাকা দিয়ে ৩০ বছর আগের সিনেমা কিনে ১ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন পেয়ে তিন ঘন্টা ধরে কেটে কেটে দিনে দুবার দেখাবেন, আবার বলবেন আপনি অনুষ্ঠান প্রচার করছেন। মানুষকে এতো বোকা ভাবেন কেনো?
এই সিনেমা,বস্তাপচা নাটক বাজারের টঙ দোকানে চা পান খেয়ে খেয়ে একটা শ্রেণির দর্শক দেখে। আপনি যদি মনে করেন তারাই আপনার প্রকৃত দর্শক,তাদের বাজার ধরবেন তা হলে আমার কিছু বলার নেই। তবে আপনার টেলিভিশন রুচিশীল দর্শকের ঘরে টিউন হবে না। আপনার রুচিও টঙ দোকানদারের মতোই এবং, বুকটা ফাইট্টা যায় ‘মার্কা গানের স্রোতা আপনি। আপনার দ্বারা রুচিশীল কিছু হবে না।
গত কয়েকবছরে বাংলাদেশের টিভিগুলোতে খবর আর টকশো ছাড়া এমন একটা অনুষ্ঠানের নাম বলুনতো যা আপনি মনে রাখতে পেরেছেন? অথবা আপনি আগ্রহ নিয়ে দেখেছেন? সেই কবে এনটিভিতে ক্লোজআপ ওয়ান হয়েছিলো। দেশের মানুষ এখনো সেটাই মনে রেখেছে। এ মানের অনুষ্ঠান কি আর হয়েছে? আমি নিজেওতো একজন দর্শক। এখনো মনে আছে ক্লোজআপ ওয়ান দেখার জন্য শাহবাগের আড্ডা ফেলে বাসায় চলে আসতাম। তখন কয়েক বন্ধু মিলে ব্যচেলর বাসায় থাকতাম। ক্লোজআপ ওয়ানের শিল্পীদের গান শুনার জন্য সবাই মিলে চাঁদা তুলে টিভি কিনেছিলাম।
এখনো বিউটি,নোলক,সালমা, নিশিতার ছবি চোখে ভাসে। আমরা কেনো এতোদিন তাদের মনে রেখেছি? নিশ্চয় আমাদের মস্তিস্কে এখনো সেটা স্মৃতি হয়ে আছে। এর পর আর এমন অনুষ্ঠান হলোনা কেনো?
আপনি ১২ বছরের বাচ্চাকে দিয়ে, আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল,কিংবা ‘দুই ভূবনের দুই বাসিন্দা বন্ধু চিরকাল ‘ ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে ‘ এমন পাকনামি গান গাওয়াবেন আর ভাববেন দর্শক মাত করে দিয়েছেন তা কিন্তু ভুল। আপনার পরিণতিবোধের সমস্যার কারণে অনুষ্ঠান কিন্তু জনপ্রিয় হয়না।
আপনি পাশের দেশের টিভির রিয়ালিটি শোর অনুকরণে অনুষ্ঠান করতে চান, কিন্তু গবেষণা করবেন না, টাকা খরচ করবেন না, তিন ফিট সেট বানিয়ে রিয়ালিটি শো করবেন আপনার অনুষ্ঠান মানসম্পন্ন হবে কেমনে? আপনার অনুষ্ঠান দর্শককে বিনোদন দেয়াতো দূরের কথা টিভি বন্ধ করে গালাগাল করে চলে যায়।
কাজেই আত্মসমালোচনা করুন। আপনার অনুষ্ঠান কেনো দেখেনা নিজের ঘরেই খবর নিন। আমি খবরের কারবারি। আমি জানি আমার দেশে খবরটা ভালো হয়। এই দেশ খবরে ভর্তি। চোখ কান খোলা রাখলেই খবর মেলে। দেশের মানুষও খবরের ভক্ত। খালি খবর জানতে চায়। কারো সাথে দেখা হলেই বলে, কি খবর? এর পর বলে, কেমন আছো? তার মানে খবরের খুবই চাহিদা। এই খবর নিয়ে মানুষের কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব ছিল। আমাদের মাইন্ডসেট গেছে হট খবর মানেই শুধু সরকারের বিরুদ্ধে খবর, রাজনীতির খবর। প্রতিদিনের মন্ত্রী মিনিস্টারের খবর। কিন্তু এর বাইরের খবরের খবরই নিই না। বর্তমানে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় আর অনুসন্ধানমূলক রিপোর্ট না থাকায় এই খবর শোনার প্রতিও মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। সব টিভিতেই একই মার্কা খবর। একই ধরনের উপস্থাপনা। কোথাও নতুনত্ব নেই।
টকশোর একটা চাহিদা ছিল। কিন্তু এখানেও কোনো নতুনত্ব নেই। সব এক ফরমেটে চলছে। আলোচনার বিষয় শুধু রাজনীতি। প্রতিদিনের আলোচক কিছু চেনা মুখ। আর এই চেনামুখগুলো সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তারা জানেন না এমন কোনো বিষয় নেই। মানুষ তাদের দেখতে দেখতে বিরক্ত হওয়ায় এখন টকশোরও আর দর্শক চাহিদা নেই।
করোনাকালে তিন মাস ধরে বাসায় বন্দি। যেহেতু মিডিয়ায় কাজ করি, ফলে সবকিছুতেই একটা খবর নেয়ার বাতিক আছে। তিনমাস বাসার সদস্যদের পর্যালোচনা করে দেখেছি তারা দু’একটা টিভির খবর দেখে, মিউট করে স্ক্রল দেখে একটা টিভিতে বাংলায় ডাবিং করা বিদেশী সিরিয়াল দেখে। বাচ্চারা দূরন্ত টিভি দেখে। এ ছাড়া বেশীরভাগ সময় ভারতের জি-বাংলাসহ অন্যান্য চ্যানেলের সিরিয়াল দেখে। কোনো সিরিয়াল মিস দিতে চায় না। কি আছে এসব সিরিয়ালে যাতে নেশা ধরিয়ে দেয়? আমাদের নির্মাতারা কি এ নিয়ে কোনো গবেষণা করেছেন?
এই করোনাকালেও আমাদের টিভিগুলো ঘরে বন্দি থাকা দর্শকদের চাহিদামতো কোনো অনুষ্ঠান তৈরী করতে পারলো না। অন্তত আমার চোখে পড়েনি। অথচ পশ্চিমবাংলার টিভিগুলো কিন্তু নানা অনুষ্ঠান বানিয়েছে ঘরে বসে থেকেই। দর্শক দেখেছেও। জাস্ট আইডিয়া।
প্রযুক্তির কল্যাণে এখানেও অনেককিছুই করা সম্ভব ছিল।
কিন্তু আমরা এসব চিন্তার ধারে কাছেই যেতে চাইনা। শুধু বলা হয়, টাকা নেই,বাজেট নেই, স্পনসর নেই। এই নেই নেই করেই আমরা তলানিতে যাচ্ছি।
বস্তাপচা নাটক আর ত্রিশ বছর আগের সিনেমা নিয়ে দর্শকের কাছাকাছি যেতে পারবেন না। মানুষ সব ইউটিউবমুখি হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞাপনের বাজারও চলে যাচ্ছে। সামনে কঠিন সময় আসছে। এমনিতেই মহামারির কারণে বাজার মন্দা। অর্থনীতির অবস্থা টালমাটাল। এ অবস্থায় টিকে থাকতে হলে সবকিছুতেই নতুনত্ব আনতে হবে। পরিবর্তিত ব্যবস্থার সঙ্গে চলতে হলে মেধা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে আগাতে হবে। মনে রাখতে হবে পাশের পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে কয়েকগুণ বেশী দর্শক আমাদের। ১৭ কোটি মানুষের বাজার। হেলাফেলা নয় কিন্তু। তারা আমাদের বাজার দখল করে ফেলছে অথচ আমরাই আমাদেরটা দখল করতে পারলাম না। এটাই দূঃখ।

চিকিৎসা দিতে অনীহায় মৃত্যু হলে ফৌজদারি অপরাধ হবে, হাইকোর্টের এমন নির্দেশনা একদিনের ব্যবধানে আপিল বিভাগে স্থগিত

0

সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসা দিতে অনীহা দেখালে এবং এতে রোগীর মৃত্যু হলে তা ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’ অর্থাৎ ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে যে আদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট, একদিনের ব্যবধানে তা স্থগিত হয়ে গেছে।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এই স্থগিতাদেশ দেন। অবশ্য বিচারপতি নুরুজ্জামান হাইকোর্টের দেয়া ১১ টি নির্দেশনার মধ্যে তিনটি নির্দেশনা বহাল রেখেছেন।
কয়েকটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এসব নির্দেশনার মধ্যে ছিল,

আইসিইউতে চিকিৎসাধীন কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক যেন মাত্রাতিরিক্ত বা অযৌক্তিক ফি আদায় করতে না পারে সেজন্য নজরদারির ব্যবস্থা করা।

এছাড়াও অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ ও বিক্রিতে ‘মনিটরিং’ জোরদার করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অক্সিজেন সিলিন্ডারের খুচরা ও রি-ফিলিংয়ের মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ দিয়ে আদেশে আদালত বলেছে, সিলিন্ডারের নির্ধারিত মূল্য খুচরা বিক্রেতাদের প্রতিষ্ঠান/দোকানে প্রদর্শন করতে হবে।

কৃত্রিম সংকট রোধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও রোগীর পরিচয়পত্র ছাড়া অক্সিজেন সিলিন্ডারের খুচরা বিক্রি বন্ধের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারে বলে অভিমত দিয়েছে আদালত।

রাজধানী ঢাকায় ‘লকডাউন’ জারির বিষয়ে আদালত আদেশে বলেছে, সরকার ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশকে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে বিভক্ত করে পর্যায়ক্রমে লকডাউনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। এমতাবস্থায় বর্তমান পর্যায়ে লকডাউনের বিষয়ে কোনো আদেশ দেওয়া সংগত হবে না মর্মে আদালত মনে করে।
গত ১১ মে সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে সাধারণ (নন-কোভিড) রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত দুটি নির্দেশনা জারি করে।
এছাড়াও ৫০ শয্যা বা তার বেশি শয্যা বিশিষ্ট সরকারি, বেসরকারি হাসপতালে কোভিড ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার জন্য পরে গত ২৪ মে আরেকটি নির্দেশনা জারি করে।
এ তিনটি নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে আদালত আদেশে বলেছে, এসব নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কি না তা জানিয়ে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রতিবেদন দিতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এসব নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি না, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে বলেছে আদালত।
এছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০ শয্যা বা তার বেশি শয্যার বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে সোমবার নাগাদ কত জন কোভিড-১৯ রোগী এবং সাধারণ রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছে সে প্রতিবেদনও ৩০ জুনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
আদালত আদেশে বলেছে, সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে অধিকতর জবাবদিহিমূলক ও বিস্তৃত করতে হবে। ভুক্তভোগীরা যাতে এ সেবা দ্রুত ও সহজে পেতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
কোনো হাসপাতালে আইসিইউতে কতজন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং কতটি আইসিইউ শয্যা কী অবস্থায় আছে, তার সর্বশেষ অবস্থা প্রতিদিনের প্রচারিত স্বাস্থ্য বুলেটিন ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইসিইউ ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং সেলে ভুক্তভোগীরা যাতে সহজেই যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য ‘আইসিইউ হটলাইন’ নামে আলাদা একটি হটলাইন চালু করতে হবে। হটলাইন নম্বর প্রতিদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশেষ করে টেলিভিশন মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
এছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে কি না, সে বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিন পর পর একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৫ দিন পর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত আদেশে অভিমত দিয়ে বলেছে, “দেশে বিদ্যমান সামগ্রিক পরিস্থিতি অর্থাৎ বর্তমানে দেশে বিরাজমান করোনা পরিস্থিতি একটি দুর্যোগ বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গৃহীত কার্যক্রমের পাশাপাশি সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২ এর ধারা-১৪ অনুসারে ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অরডিনেশন গ্রুপ’ এর কার্যক্রমকে সক্রিয় করার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে।”
আদালত মনে করে ওই কমিটি কার্যকর হলে কমিটির সুপারিশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক রিকুইজিশান করা যেতে পারে।
হাইকোর্টের এসব নির্দেশনার পরই সরকার দ্রুততার সঙ্গে আপিল করে। ভার্চুয়াল চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের আদালতে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারিদের পক্ষে জেড আই খান পান্না।
শুনানি শেষে হাইকোর্টের ১১ টি নির্দেশনার মধ্যে ৩ টি বহাল রাখা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, গত ১১ ও ২৪ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা নির্দেশনা যথাযথ ভাবে পালিত হচ্ছে কি না এ বিষয়ে ৩০ জুনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছিল তা বহাল রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ( আইসিইউ) চিকিৎসাধীন কোভিড-১৯ চিকিৎসা ক্ষেত্রে যেন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে মাত্রাতিরিক্ত বিল আদায় না করতে পারে সে বিষয়ে তদারকির ব্যবস্থা করার নির্দেশনা বহাল রাখা হয়েছে। আর অক্সিজেন সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য এবং রিফিলিংয়ের মূল্য নির্ধারণ, সিলিন্ডারের মূল্য প্রতিষ্ঠান বা দোকানে প্রদর্শন করা,কৃত্রিম সংকট রোধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও রোগীর পরিচয় ছাড়া অক্সিজেন বিক্রি বন্ধ করার যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তা বহাল রাখা হয়েছে।

টাকার জোরে স্বামী-স্ত্রী দু’জনই হয়ে যান সংসদ সদস্য, ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা; কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষীপুরের এমপি পাপলু রিমান্ডে

0

স্রেফ টাকার জোরে এমপি হয়ে যান লক্ষীপুর -২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপলু। শুধু তিনি নিজেই নন স্ত্রী’র আবদার মেটাতে সংরক্ষিত আসনে স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংসদ সদস্য বানান। দেশের সংসদীয় ইতিহাসে এটা এক বিরল ঘটনা। টাকার কী ক্ষমতা এটা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন সাংসদ পাপলু ও তার স্ত্রী। টাকা হলে সব সম্ভব এটাও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এই এমপি দম্পতি।
এ দিকে মানবপাচার ও অর্থপাচারের ঘটনায় কুয়েতে গ্রেপ্তার এমপি শহীদ ইসলামকে নিয়ে বিব্রত সরকার। দেশের একজন সংসদ সদস্য বিদেশে এ ভাবে গ্রেপ্তার হওয়ায় দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হয়েছে। তবে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য গ্রেপ্তার হলেও কুয়েত সরকারের পক্ষ থেকে তা বাংলাদেশ দূতাবাসকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয় নি। এ নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে অনানুষ্ঠানিক ভাবে খবরাখবর নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সস্ত্রীক কাজী শহীদের এমপি হওয়া নিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। লক্ষীপুরের রাজনীতিতে অজ্ঞাতকুলশীল কাজী শহীদ ইসলাম হঠাৎ করেই টাকার বস্তা নিয়ে এলাকায় আসলেন, টাকা ঢাললেন আর হয়ে গেলেন এমপি। কোনো দল থেকেও মনোনয়ন নেননি। শুধু লাইন ঘাট ঠিক রেখেছেন। এই যা।
এলাকার পোড়খাওয়া রাজনৈতিক নেতারাও হতভম্ব। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া তাদের করার কিছুই ছিলোনা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের আসন ভাগাভাগি অনুযায়ী লক্ষীপুর-২ আসনটি পড়েছিল এরশাদের জাতীয় পার্টির ভাগে। সে অনুযায়ী সেখানে প্রার্থী হন জাতীয় পার্টি জেলা সভাপতি মোহাম্মদ নোমান । অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আপেল প্রতীক নিয়ে দাঁড়ান কাজী শহীদ। ভোটের কিছু দিন আগে নিরব হয়ে যান জাপা প্রার্থী। এক পর্যায়ে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান জাপা প্রার্থী। সমর্থন জানান কাজী শহীদ ইসলাম পাপলুকে। গুঞ্জন রটে পাপলুর সঙ্গে তার সমঝোতা হয়। আর তা হয় বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি থেকেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের চিঠি দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করার নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক ড. সেলিম মাহমুদ স্বাক্ষর করে রহস্যজনক এই চিঠি পাঠান। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কের চিঠি পেয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা পাপলুর পক্ষে অবস্থান নেন এবং তাকে বিজয়ী করেন।
নিজে এমপি হওয়ার পর তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে এমপি বানানোর ইচ্ছে পোষণ করেন। কিন্তু স্ত্রীকে স্বতন্ত্র এমপি করতে না পেরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের ধরে স্ত্রীকেও এমপি বানিয়ে নেন। সবকিছু ম্যানেজ করে স্বামী স্ত্রী দুজনই এমপি নির্বাচিত হয়ে দেশের সংসদের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন রেকর্ড স্থাপন করেন কাজী শহিদ ও সেলিনা ইসলাম।
এমপি পাপলুর পারিবারিক ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে পারিবারিকভাবে তারা বিএনপির রাজনীতির সমর্থক। তার বড় ভাই কাজী মঞ্জুরুল আলম কুয়েত বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। তাদের পরিবারের কেউ কখনো আওয়ামী লীগ করাতো দূরের কথা সমর্থনও করে না। কিন্তু কাজী শহীদ গত কয়েকবছর ধরে কুয়েতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসছেন। আর তার বড় ভাই আছেন বিএনপির নেতৃত্বে।
এমপি হওয়ার টার্গেট নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে এলাকায় আসা-যাওয়া শুরু করেন কাজী শহীদ । করতে থাকেন দান খয়রাত। এলাকার যুবকদের নানাভাবে তার পক্ষে টানেন। মসজিদ মাদ্রাসায় দান করেন। এ ভাবেই এলাকায় সম্পৃক্ত হন।
কিন্তু এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর আর পারতপক্ষে এলাকায় যান না এমনটাই বলছেন স্থানীয়রা। তবে এলাকার এমপি মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকা এবং কুয়েতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলা যাওয়ার ঘটনায় সবাই ক্ষুব্ধ। বিষয়টি এলাকার জনগণের জন্য অপমানকর বলে মনে করা হচ্ছে।
নোটিশ দিয়েছে দুদুকঃ এদিকে এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপলু, তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, তাদের কন্যা ও শ্যালিকার সার্বিক তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন, দুদক। গত ১০ জুন এই চিঠি পাঠান দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। চিঠিতে এই চারজনের বিস্তারিত তথ্য অর্থাৎ নাম এবং পরিবর্তিত ও অপরিবর্তিত ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র,পাসপোর্ট নাম্বার চাওয়া হয়েছে। দুদক সূত্র জানিয়েছে গত ফেব্রুয়ারী মাসে এমপি পাপলুর বিরুদ্ধে মানব পাচার,হুন্ডি ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এই অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।
মানবপাচারের অভিযোগে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ আবাসিক এলাকার বাসা থেকে পাপলুকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের সিআইডি। তার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয় এবং রিমান্ডে জিজ্ঞসাবাদের অনুমতি দেয় দেশটির আদালত। শুক্রবার তাকে নিয়ে অভিযানে নামে সিআইডি। তার বাসা থেকে ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করে। এতে গত তিন মাসে কুয়েতের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও কানাডায় বিপুল পরিমাণ অার্থিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
কুয়েতে মুদ্রা পাচার ও মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে কয়েকজন বাংলাদেশী সাক্ষী দিয়েছেন বলে জানা গেছে। কুয়েতের পত্র পত্রিকায় এ নিয়ে খবর বের হয়েছে।
এ দিকে বাংলাদেশের একজন আইন প্রণেতা তথা সংসদ সদস্য মানব পাচারের দায়ে কুয়েতে গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে দেশের ভাবমূর্তি। বিষয়টি কুয়েতের সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও খবরটি এসেছে। যা নিয়ে লজ্জায় পড়েন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

তামাক খাতে ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, হুমকিতে পড়বে জনস্বাস্থ্য

0

তামাক কর ও মূল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে সরকার তামাক খাত থেকে  ১১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে পারতো। দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৬ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হতো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তামাককে করোনা সংক্রমণ সহায়ক হিসেবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জোর তাগিদ দিলেও প্রস্তাবিত বাজেটে এসবের কোনো প্রতিফলন নেই। 
তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা ও আত্মার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক করা না বাড়ানোয় সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয় যে হারে কর বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে এতে ধুমপান নিরোধে কোনো ভূমিকা রাখবে না।
বাজেট পর্যালোচনা করে প্রজ্ঞা ও আত্মার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সিগারেটের ৪টি মূল্যস্তর বহাল রাখায় কমদামি সিগারেট বেছে নেয়ার সুযোগ অব্যাহত থাকবে এবং তরুণরা ধূমপান শুরু করতে উৎসাহিত হবে। ফলে সিগারেটের ব্যবহার না কমে বরং বৃদ্ধি পাবে। বাজেট প্রস্তাবে নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম মাত্র ২ টাকা বাড়িয়ে ৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, অর্থাৎ প্রতি শলাকায় দাম বৃদ্ধি পাবে মাত্র ২০ পয়সা বা ৫.৪ শতাংশ। অথচ একইসময়ে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১১.৬ শতাংশ। সিগারেট বাজারের প্রায় ৭২ শতাংশই নিম্নস্তরের সিগারেটের দখলে। এই স্তরে সম্পূরক শুল্ক ধার্য করা হয়েছে ৫৭ শতাংশ, যা গতবছর ছিল ৫৫ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে এই স্তরের সিগারেটের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে এবং ব্যবহার বাড়বে। বিড়ির শলাকা প্রতি মাত্র ১৬ পয়সা দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে, এতে বিড়ির ব্যবহার কমবেনা বরং দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে। অন্যদিকে, ১০ গ্রাম জর্দার দাম ১০ টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা সন্তোষজনক। তবে ১০ গ্রাম গুলের দাম বাড়ানো হয়েছে মাত্র ৫ টাকা। এরফলে নারী এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে এসব তামাকপণ্যের ব্যবহার খুব একটা কমবেনা। সার্বিকভাবে অতিরক্তি রাজস্ব আহরণ, অকাল মৃত্যুরোধ এবং করোনা সংক্রমণের ‍ঝুঁকি হ্রাসে প্রস্তাবিত তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ কোনো ভূমিকা রাখবেনা, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।
প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যমস্তরে সিগারেটের দাম না বাড়িয়ে ৬৩ টাকা রাখা হয়েছে। উচ্চ এবং প্রিমিয়াম স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম যথাক্রমে ৪ টাকা এবং ৫ টাকা বৃদ্ধি করে ৯৭ টাকা এবং ১২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই তিনটি মূল্যস্তরে বর্তমান ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির তুলনায় দাম বৃদ্ধি কম হওয়ায় সিগারেটের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে। তামাকবিরোধীদের দাবি অনুযায়ী সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি এবং সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর আকারে আরোপ না করায় সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে এবং তামাক কোম্পানিগুলোর আয় বৃদ্ধি পাবে ফলে তারা মৃত্যুবিপণনে আরো উৎসাহিত হবে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এছাড়াও করোনাভাইরাস সংক্রমণের আর্থিক এবং স্বাস্থ্য ক্ষতি মোকাবেলায় ৩ শতাংশ সারচার্জ আরোপ করার দাবি জানানো হয়েছিল যার প্রতিফলন বাজেট ঘোষণায় নেই।
জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিড়ির ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ প্রস্তাবিত বাজেটে নেই। করোনা মহামারী চলাকালীন বিগত ২ মাস ধরে বিড়ি শ্রমিকদের ব্যবহার করে কারখানার মালিকপক্ষ যে অযৌক্তিক আন্দোলন  চালিয়েছে তার ফল স্বরূপ বাজেট ঘোষণায় তাদেরকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির মূল্য মাত্র ৪ টাকা বৃদ্ধি করে ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে প্রতি শলাকা বিড়ির মূল্য বৃদ্ধি পাবে মাত্র ১৬ পয়সা। এরফলে দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিড়ির ব্যবহার আরও বেড়ে যাবে। অন্যদিকে, টানা পঞ্চম বছরের মত বিড়ির সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশে বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা নি:সন্দেহে জনস্বাস্থ্যবিরোধী।
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৪০ টাকা এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, সম্পূরক শুল্ক ধার্য করা হয়েছে ৫৫ শতাংশ। ধোয়াঁবিহীন তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে এই মূল্য বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবেনা। বাংলাদেশে বর্তমানে তামাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন। বাস্তবতা হলো মোট তামাক রাজস্বের ১ শতাংশেরও কম আসে ধোঁয়াবিহীন তামাক থেকে। সুতরাং ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য থেকে সরকারের বাড়তি রাজস্ব আয়ের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।
তামাক ও তামাকজাত পণ্য রপ্তানি উৎসাহিত করতে রপ্তানি শুল্ক অব্যাহতির সুযোগ প্রস্তাবিত বাজেটেও রাখা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং খাদ্যশস্য চাষাবাদ ও পরিবেশবিরোধী পদক্ষেপ। এরফলে তামাক চাষ বৃদ্ধি পাবে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে এবং কোভিড-১৯ মহামারী পরবর্তী সময়ে দেশের খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বাধার সৃষ্টি করবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখিয়ে দিয়েছে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আগাম পদক্ষেপ গ্রহণ কতটা জরুরি। তবে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তামাকপণ্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে প্রস্তাবিত বাজেটে কার্যকর কর ও মূল্য বৃদ্ধির পদক্ষেপ উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে সরকার অতিরিক্ত প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে, ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক তামাক ব্যবহারকারী ও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নজিরবিহীন স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যও বাধাগ্রস্ত হবে।

অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি ছিল না, ইউনাইটেডে আগুনে পুড়ে ৫ রোগীর মৃত্যু কর্তৃপক্ষের অবহেলায়ঃ ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত রিপোর্ট

0

রাজধানীর ইউনাইটেড হাসাপাতালে আগুনে পুড়ে ৫ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের অবহেলাকেই দায়ি করা হলো। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষ করে বুধবার এই রিপোর্ট দাখিল করে। এতে বলা হয়, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি না থাকা এবং ব্যবহার অনুপযোগী পুরোনা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র( এসি) থেকেই আগুন লাগে । সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের এই তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এখন স্পষ্ট হলো কথিত অভিজাত এই হাসপাতালটিতে রোগীদের নিরাপত্তায় কতো অবহেলা আর গাফিলতি ছিল।
গত ২৭ মে বুধবার রাতে গুলশান ২ নম্বরের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগুন লাগে। এতে করোনা ইউনিটে থাকা পাঁচজন রোগী আগুনে পুড়ে মারা যান। ওই পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। বাকি দু’জনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি তদন্ত শেষে বুধবার ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। মহাপরিচালক ওই তদন্ত প্রতিবেদন এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই করোনা ইউনিটে অগ্নিনির্বাপনের সরঞ্জাম ছিল না। ত্রুটিপূর্ণ জেনেও পুরনো শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) যন্ত্র বসানো হয় করোনা ইউনিটে। এসির বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকেই আগুন লাগে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ভষ্মীভূত করোনা ইউনিটটি অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছিল। অবকাঠামো পারটেক্স দিয়ে তৈরি, যা অতিমাত্রায় দাহ্য। আগুন যখন লেগেছে তাৎক্ষণিকভাবে একসঙ্গে পুরোটায় লেগে যায়। দায়িত্বরত কর্মকর্তারা নিজের প্রাণ বাঁচাতে সবাই বেরিয়ে নিরাপদে চলে যান। আগুন লাগার সময় রোগীদের বাাঁচানোর চেষ্টা করা হয়নি। ফলে আগুন লাগার পর একজন রোগীও বের হতে পারেননি। সেখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ অতিদাহ্য অনেক পদার্থ রাখা ছিল।’
তদন্ত কমিটির প্রধান ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত কমিটি মূলত আগুন লাগার কারন, অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থার দুর্বলতার বিষয়কে তদন্তে অগ্রাধিকার দিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিবরণ এবং একইসঙ্গে প্রতিকারের সুপারিশ করা হয়েছে। তারা করোনা ইউনিটে কোনো ধরনের ফায়ার এক্সিট রাখেনি। সেখানে ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল।’
প্রসঙ্গত আগুনে পুড়ে ৫ জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়। পরবর্তীতে ৩ জুন
অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ভেরন এ্যান্থনী পলের জামাতা রোনাল্ড মিকি গোমেজ। দন্ডবিধির ৩০৪ (ক) ও ১০৯ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় আসামী করা হয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান, এমডি ,সিইও,পরিচালক, সেদিন দায়িত্বপালনকারি চিকিৎসক নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের।
এর আগে গত ২ জুন এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনাইটেড হাসপাতালে ৫ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন চায় হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল কোর্টে দুই আইনজীবীর করা রিটের শুনানি শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ফায়ারসার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিশের আইজিকে ১৪ জুনের মধ্যে আলাদাভাবে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

গত ২৭ মে হাসপাতালটির করোনা ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডে পাঁচজন রোগীর মৃত্যুতে বেড়িয়ে আসে থলের বেড়াল । এই হাসপাতালটিতে করোনা রোগী ভর্তি করা হতো না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চাপে হাসপাতালের আঙ্গিনায় জোড়াতালি দিয়ে একটা ইউনিট করা হয়েছিল। সেখানেই ভর্তি ছিলেন কয়েকজন করোনাআক্রান্ত রোগী।
অগ্নিকাণ্ডে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় ওই দিনই হাসপাতাল পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত দল হাসপাতালটির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় নানা অব্যবস্থাপনা আর অসঙ্গতি চিত্র দেখে বিষ্মিত হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামও হাসপাতালটি পরদর্শনে গিয়ে একই দৃশ্য দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ফায়ারসার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধনের নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে সংস্থাটি। কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাসপাতালটির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কথা সাংবাদিকদের জানান। বলেন, হাসপাতালটিতে ১১ টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র পাওয়া গেছে যার মধ্যে ৮ টি যন্ত্রেরই মেয়াদ ছিলো না। এ ছাড়া ফায়ার ফাইটার, ফায়ার ড্রিল এবং ফায়ার টিমও ছিল না। হাসপাতালটিতে আগ্নিনির্বাপনের দায়িত্বে একজন কর্মকর্তা থাকলেও ঘটনার সময় তিনি ছিলেন অনুপস্থিত। ফলে ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকলেও সেটার মুখ খুলে দেয়ার মত কেউ ছিল না। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে ফায়ার হাইড্রেন্টের মুখ খুলে দেয়।
ফায়ারসার্ভিসের তদন্ত কমিটি জানায়, হাসপাতালের আঙ্গিনায় যেখানে করোনা ইউনিট স্থাপন করা ছিল সেখানে বাতাস চলাচলের কোনো ভেন্টিলেশন ছিলনা, সবগুলো এসি ছিল নেগেটিভ প্রেসারের। এ ছাড়া পুরোটা জুড়ে বৈদ্যুতিক তার এলোমেলো করে রাখা ছিল, আর ছিল প্রচুর পরিমান হ্যান্ড স্যানিটাইজার । ফলে আগুন লাগার সাথে সাথে এসব দাহ্য পদার্থের স্পর্শে তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ারসার্ভিস কর্মকর্তারা এতোবড় হাসাপাতালটির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দেখে বিষ্ময় প্রকাশ করেন।

বড় দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছেন রিভা গাঙ্গুলি, ঢাকা আসছেন ভারতের নতুন হাইকমিশনার

0

ঢাকায় ভারতের নতুন হাইকমিশনার নিযুক্ত হচ্ছেন। বর্তমান হাইকমিশনার রিভা দাস গাঙ্গুলি আরো বড় দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব বিভাগের সচিব পদে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। ঢাকায় নতুন হাইকমিশনার হিসেবে কে দায়িত্ব পাচ্ছেন তা নিশ্চিত না হলেও দুই রাষ্ট্রদূতের নাম বিবেচিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
নয়াদিল্লির কুটনৈতিক সূত্রগুলো থেকে সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী এমন তথ্য জানিয়েছেন। সম্ভাব্য যে দুজনের নাম আলোচনা হচ্ছে তারা হলেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত বর্তমান রাষ্ট্রদূত বিনয় কুমার এবং ইতালিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত শ্রীমতী রিনাত সান্ধু। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নতুন হাইকমিশনারের নাম ঘোষণা করা হবে। পরবর্তী হাইকমিশনার হিসেবে নিউইয়র্কে কর্মরত ভারতের কনসাল জেনারেল সন্দীপ চক্রবর্তীর নাম বিবেচিত হচ্ছিল। তবে আপাতত তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকা বিভাগের যুগ্ম সচিব হবেন। ঢাকায় রাষ্ট্রদূত পদটি সচিব পর্যায়ের। তাই সন্দীপ আপাতত হচ্ছেন না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন মুখপাত্র রভীশ কুমার ফিনল্যান্ডে রাষ্ট্রদূত হয়েছেন। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা আমেরিকায় রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হওয়ার পর রিভা দাস গাঙ্গুলি ঢাকায় নিযুক্ত হন। তার কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর জন্যই তাকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হচ্ছে। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য হাইকমিশনারদের কেউই কখনো বাংলাদেশে কাজ করেননি। বিনয় কুমার ১৯৯২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। তিনি বিভিন্ন পদে তাসখন্দ, অটোয়া, ওয়ারশ, তেহরান, নিউইয়র্ক ও কাঠমান্ডুতে দায়িত্ব নির্বাহ করেন। রিনাত সান্ধু ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বর্তমান রাষ্ট্রদূত তরণজিত সিং সান্ধুর স্ত্রী। ১৯৮৯ সালে তিনি ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। তিনি বিভিন্ন কূটনৈতিক পদে মস্কো, কিয়েভ, ওয়াশিংটন, কলম্বো, নিউইয়র্ক ও জেনেভায় দায়িত্ব পালন করেছেন। রিনাত নিযুক্ত হলে তিনি হবেন ঢাকায় তৃতীয় মহিলা হাইকমিশনার।
২০১৯ সালের মার্চে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন রিভা গঙ্গোপাধ্যায় দাস।
এর আগে নব্বইয়ের দশকে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসে ফাস্ট সেক্রেটারি (তথ্য)-র দায়িত্বে ছিলেন রিভা। হাইকমিশনার হিসেবে ঢাকায় আসার আগে তিনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনসের (আইসিসিআর) মহানির্দেশক ছিলেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পর পেশাদার কূটনীতিক শ্রীমতী রিভা গঙ্গোপাধ্যায় দাস ১৯৮৬ সালে বিদেশ মন্ত্রকে যোগ দেন। বিদেশ মন্ত্রকে যোগ দেওয়ার আগে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। বিদেশ মন্ত্রকে যোগ দেওয়ার পর স্পেন থেকে ৩৩ বছরের কূটনৈতিক কর্মজীবন শুরু হয় তাঁর। এরপর তিনি সদর দপ্তরে বহিঃপ্রচার, নেপাল এবং পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন বহুদিন। তিনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন-সহ অন্যান্য পরিবেশগত সমঝোতাতেও অংশ নেন। তিনি নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের উপ হাই কমিশনারের দায়িত্বও সামলেছেন। আর ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সাংহাইয়ে ভারতীয় কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
চীন থেকে ফিরে বিদেশ মন্ত্রকের জনকূটনীতি বিভাগ এবং ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান বিভাগের নেতৃত্ব দেন। একই সঙ্গে রোমানিয়া, আলবেনিয়া ও মলডোভায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হিসেবে এবং পরবর্তীতে নিউ ইয়র্কে ভারতের কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় সফল দায়িত্ব পালনে শেষে আরো বড় দায়িত্ব নিয়ে তিনি দেশে ফিরে যাচ্ছেন বলে কুটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।