দুর্নীতির মামলায় ২৫ মাস কারাভোগের পর মানবিক কারণে সরকারের অনুকম্পায় ৬ মাসের জন্য মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেয়া হয় তাকে। এসময় দলের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ বিপুল সংখ্যক কর্মী উপস্থিত ছিলেন। দলের নেতাকর্মীর ভীড় আর স্লোগানের মধ্যে দিয়ে গুলশানের ভাড়া বাড়ি ফিরোজায় পৌঁছান খালেদা জিয়া।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী থেকে কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। তাকে প্রথমে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হলেও গতবছরের ১ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।
খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য গত দুবছর ধরে তার আইনজীবীরা নানা আইনী লড়াই করলেও তাতে সফল হননি। একইভাবে দলের পক্ষ থেকেও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে নি। আইনী ও আন্দোলন করে মুক্ত করতে না পারায় এ মাসের শুরুতেই খালেদা জিয়ার ভাই, বোন ও পরিবারের স্বজনরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেয়ে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী তাকে সাময়িক মুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়। এ ক্ষেত্রে দেয়া হয় বেশ কিছু শর্ত। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে, তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, ঢাকার বাসায় চিকিৎসা নিতে হবে, সরকারের অনিষ্ট হয় এমন কিছু করতে পারবেন না। শর্ত মেনে রাজি হওয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তির নথি আইনমন্ত্রণালয়,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় হয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আসে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে কারাগারে পাঠায়। বেলা তিনটার দিকে প্রজ্ঞাপনের কপি কারাগারের একজন কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নিয়ে আসেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।