স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্যের ‘ঘুষ দিতে না পারায় জমি রেজিস্ট্রি হয়নি’ বলে বক্তব্যের পর যশোরের একজন সাব-রেজিস্ট্রারসহ দুইজনকে কারণ দর্শাতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া একজন মোহরারকে বদলি করা হয়েছে।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুক এই কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন। তাছাড়া সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের অফিস সহকারী শেখর চন্দ্র দে কেও এই নোটিশ দেয়া হয়েছে।
একই দপ্তরের মোহরার শামসুজ্জামান মিলনকে বাঘারপাড়া সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে সাব-রেজিস্ট্রার শাহজাহান আলী জানান তিনি ইতিমধ্যে নোটিশের জবাব দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, “প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে তথ্য দেয়া হয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য্য শুভর নামে একটি জমি রেজিস্ট্রি করতে আসেন দলিল লেখক কামরুজ্জামানের সহকারী গৌতম ঘোষ বাপি।
“তখন কর্তব্যরত মোহরার শামসুজ্জামান মিলন তাকে জানান, এখনও ৪০টি দলিল সিরিয়ালে রয়েছে। এ সময় বাপি ও মিলনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। তখন মোহরার মিলন দলিল নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে যান। সাব-রেজিস্ট্রার দলিলসহ কাগজপত্র যাচাই করে দেখতে পান, দলিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যাংকের পে-অর্ডার নেই। এ সময় বাপি উত্তেজিত হয়ে চলে যান। ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে পে-অর্ডারসহ দলিল নিয়ে আবার আসেন গৌতম ঘোষ বাপি। তখন দলিলটি রেজিস্ট্রি করা হয়। সাথে সাথে দলিলের নকল চান বাপি। মন্ত্রী মহোদয়ের সম্মানে দুই ঘণ্টার মধ্যে তার হাতে তা দেয়া হয়।”
জমির বিবরণ সম্পর্কে শাহজাহান আলী বলেন, “সুপ্রিয় ভট্টাচার্য্য শুভ দুই একর জামি কিনেছেন মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের মিজানুর রহমানের কাছ থেকে। জমি ওই ইউনিয়নের বাসুদেবপর মৌজার ৭৩/৭৭/৭৮/৭৯ দাগ থেকে বিক্রি করা হয়েছে। জমির মূল্য দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯ লাখ টাকা।”
অপরদিকে জমি বিক্রেতা রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “দুই একর জমি বিক্রি বাবদ আমি ৮০ লাখ টাকা পেয়েছি।”
বুধবার যশোরের মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, “সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। আমি গত সপ্তাহে একটি জমি রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে দুর্নীতির রেট অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় সেই জমি রেজিস্ট্রি হয়নি।” প্রতিমন্ত্রীর ওই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।