সুষ্ঠুভাবে অফিসের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সফটওয়্যার তৈরির নামে বাংলাদেশ বেতারের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) নারায়ণ চন্দ্র শীলের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নারায়ণ চন্দ্রের বিরুদ্ধে নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য, মালামাল ক্রয় ও আমদানিতে বিভিন্ন অনিয়ম ও লুটপাটসহ অটোমেশন সফ্টওয়্যার ক্রয়ের নামে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
বেতারের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআইএস বিভাগের অটোমেশন সফটওয়্যার তৈরির চুক্তিতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের জন্য নথি চেয়ে গত ২৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) বরাবর চিঠি দেয় দুদক।
দুদকের উপপরিচালক (বিশেষ তদন্ত-২) মোহাম্মদ ফয়সাল স্বাক্ষরিত চিঠি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ বেতার কর্তৃক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ইনোভেশন কার্যক্রমের আওতায় স্বচ্ছ দুর্নীতিমুক্ত অফিস ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআইএস বিভাগের সঙ্গে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকায় ‘অটোমেশন সফটওয়্যার’ তৈরির চুক্তি হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পায় দুদক।
প্রাপ্ত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ‘অটোমেশন সফটওয়্যার’ সরবরাহ ও সংস্থাপনের বিপরীতে সুনির্দিষ্ট কিছু নথি পর্যালোচনার জন্য এগুলোর সত্যায়িত ছায়ালিপি ৩০ জুনের মধ্যে সরবরাহ করতে বলা হয় চিঠিতে।
সেখানে নথিপত্রের বিষয়বস্তু হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কোন অনুষদের কোন বিভাগ কিংবা ইনস্টিটিউটের সামগ্রী ও সেবা সরবরাহ ও সংস্থাপনের বিপরীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার নীতিমালাও কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়। যদিও ঢাবির পক্ষ থেকে কোনো নথি সরবরাহ করা হয়নি বলে জানিয়েছে দুদক।
ওই সময় দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, ‘অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। ভিসির চিঠির কোনো উত্তর আমরা পাইনি। পরে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকেও চিঠি পাঠাব।’
তবে গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ বেতারে ট্রান্সক্রিপশন বিভাগের পরিচালক আনোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, আমরা একটি সফটওয়্যার ইন্সটল হওয়াও কথা শুনেছি কিন্তু বেতারে কোনো ধরণের সফটওয়্যার ইন্সটল হয়নি।
বেতারে কোনো ধরনের সফটওয়্যার ইন্সটল না হলেও একটি চিঠির মাধ্যমে সফটওয়্যার প্রাপ্তি স্বীকার নিশ্চিত করেছেন বেতারে সাবেক মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল। তবে ওই চিঠি প্রাপ্তি নিয়েও রয়েছে বিপত্তি। দেখা যায় দুইটি চিঠিতে দুইবার প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন মহাপরিচালক।
সফটওয়্যার ক্রয় বাবদ যে বরাদ্দ করা হয় সেই অর্থ দুই দফায় ছাড় করার কথা জানিয়েছেন বেতারে একাধিক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেতারের এক কর্মকতা বলেন, দুই বা তিন দফায় যে টাকা ছাড় করা হয়েছে তা বেতারের মহাপরিচালকের হিসাবে ঢুকেছে।