ঢাকা   সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১   সন্ধ্যা ৭:৪১ 

সর্বশেষ সংবাদ

হেফাজতের বিবৃতিই প্রমাণ করে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী, নিষিদ্ধের দাবি

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দায়িত্বশীল বক্তব্যের বিরুদ্ধে হেফাজত ইসলামের উস্কানীমূলক বিবৃতিই প্রমাণ করে হেফাজতের নেতারা মৌলবাদের পৃষ্ঠপোষক এবং রাষ্ট্র ও সংবিধানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতের বক্তব্যকে ইস্যু করে হেফাজতে ইসলামের উস্কানীমূলক বিবৃতির বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলাম আবারও প্রমাণ করেছে যে তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। আজও পর্যন্ত হেফাজতের ইসলামের কোনো নেতা জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাননি। কারণ তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও ভাষা আন্দোলনকে মেনে নিতে পারেননি। তাদের মাদ্রাসাগুলোতে জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়না এবং জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়না। তারা বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে অস্বীকার করে আসছে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলাম নিজেদের প্রকৃত চরিত্র জাতির কাছে উন্মোচিত করেছে। এরা শান্তির ধর্ম ইসলামকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। গত এক মাসে ৪০ জন মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থী বলাৎকার ও তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাগুলোর বিষয়ে নীরবতাই প্রমাণ করে হেফাজতের নেতারা বলাৎকারের সমর্থনদাতা। এরা কখনোই ইসলামের আদর্শ ধারণ করে না। এদের কাছে ইসলাম কখনোই নিরাপদ নয়। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আবেগকে পুঁজি করে এরা প্রতিনিয়ত অপরাজনীতির চর্চা করছে। সম্প্রতি মামুনুল হক কর্তৃক প্রকাশ্য দিবালোকে নবীজীকে অবমাননা ও মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থী বলাৎকারকে সমর্থন করাই প্রমাণ করে যে, এরা ধর্ম ব্যবসায়ী এবং ইসলামের প্রকৃত শত্রু। ওয়াজ মাহফিলে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানী অপশক্তিদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই এদের মূল উদ্দেশ্যে। সম্প্রতি কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের দায়িত্বশীল বক্তব্য শতভাগ যথার্থ ও সময়োপযোগী। কারণ একটি দেশের জাতির পিতার সম্মান রক্ষা করা প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাংবিধানিক দায়িত্ব। পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত জাতির পিতার সম্মান ও সংবিধান রক্ষার্থে অত্যন্ত দায়িত্বশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধান ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা তাঁর নৈতিক দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের দায়িত্বশীল বক্তব্যকে সাধুবাদ ও স্বাগত জানানোর পাশাপাশি উক্ত দায়িত্বশীল ও সাহসী বক্তব্যের জন্য তাঁকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম যে, সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী অপশক্তি হেফাজত এই বক্তব্যকে ইস্যু করে আবার ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। এরা আবার রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য ভূমিকা পালনকারী বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে হেফাজত প্রমাণ করেছে যে, এরা কখনোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, এরা এখনো বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। পুলিশ সুপারের দায়িত্বশীল বক্তব্যের বিরুদ্ধে হেফাজতের উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বিবৃতিই প্রমাণ করে যে, বাবুনগরী গংরা সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ও মৌলবাদের পৃষ্ঠপোষক। এরা একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষরা। বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করাই হেফাজতের মূল উদ্দেশ্যে। সরকারের নিকট আহবান, মহানবী (সা:) কে অবমাননা, সংবিধান লঙ্ঘন, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপরাধে হেফাজতকে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে। সংবিধান লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে মামুনুল-বাবুনগরী গংদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত