ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১   রাত ১১:০৬ 

সর্বশেষ সংবাদ

দেশে হামলার ছক কাটছে আইএস জঙ্গিরা, সারাদেশে সতর্কতা জারি পুলিশের

কোরবানির ঈদ ও অগাস্ট মাস সামনে রেখে দেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় পুলিশের সকল ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৯ জুলাই সারা দেশে পুলিশের ইউনিটপ্রধানদের চিঠি পাঠিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, আইএস মতাদর্শের দেশীয় অনুসারী ‘নব্য জেএমবির’ সদস্যরা যে কোনো সময় ‘আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলা’ পরিচালনা করতে পারে।
“এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনসহ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক।” বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো, “চিঠিতে পুলিশ স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
“জঙ্গিরা যে কোনো সময়, যে কোনোভাবে, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিশেষ করে পুলিশের উপর হামলা চালাতে পারে এমন ভাবনা থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা।
শনিবার রাতে রাজধানীর গুলিস্তানে স্টেডিয়ামের পাশে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের কাছে দায়িত্বরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্টের দাঁড় করিয়ে রাখা মটরসাইকেলে কে বা কারা পলিথিন ব্যাগে বোমা রেখে যায়।


এর আগেও একই জায়গায় পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। সেই ঘটনার পেছনে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা সে সময় বলেছিলেন তদন্তকারীরা।
পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক মনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জঙ্গিরা সবসময়ই রোজা ও ঈদ সামনে রেখে তৎপর হওয়ার চেষ্টা চালায়। তারা চায়, গণমাধ্যমে তাদের কাজের প্রচার হোক। ঈদ ঘিরে ধর্মীয় অনুভুতিকে কাজে লাগানোরও চেস্টা করে তারা। এ কারণে সব সময়ই আমরা সতর্ক থাকি।”
তাছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে অগাস্টে হত্যা-নাশকতার বেশ কিছু ঘটনা থাকায় প্রতি বছরই এ মাসে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয় বলে জানান পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি হায়দার আলী খান।
তিনি বলেন, “এই মাসে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল এই অগাস্টেই। বিভিন্ন দিক দিয়ে এই মাসটি গুরুত্বপূর্ণ।
“এই মাস ঘিরে কোনো নাশকতা ঘটতে পারে। আবার সামনে ঈদ, জঙ্গিরাও তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা চালাতে পারে। সে কারণে আমাদের সকল ইউনিটকে যে কোনো নশকতা বা হামলার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”
গত ১৯ জুলাই পুশিল সদর দপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, “বৈশ্বিক ও জাতীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে এবং প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ইসলামিক স্টেট ঈদুল আজহা সামনে রখে ‘বেঙ্গল উলায়াত’ ঘোষণার উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণত কোনো সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমেই ‘কথিত উলায়াত’ ঘোষণা করা হয়।
এ অবস্থায় ‘যে কোনো সময়’ জঙ্গিরা বোমা হামলা, হত্যাকাণ্ড বা কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা করতে পারে জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
সকাল ৬টা থেকে ৮টা এবং সন্ধ্যা ৭ থেকে ১০টা- এই সময়টিকে জঙ্গি হামলার জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে চিঠিতে।
সেখানে বলা হয়েছে, পুলিশ সদস্য, পুলিশের স্থাপনা, পুলিশের যানবাহন; বিমানবন্দর; দূতাবাস, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও মায়নমারের মিশন এবং শিয়া, আহমাদিয়া মসজিদ, মাজার, মাজার কেন্দ্রীক মসজিদ, মন্দির, চার্চ ও প্যাগোডা হতে পারে জঙ্গি হামলার লক্ষ্যবস্তু।
পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, সম্ভাব্য হামলাকারী হতে পারে ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে দাড়ি-গোঁফহীন কোনো তরুণ। তার পরনে থাকতে পারে প্যান্ট. শার্ট, টি শার্ট, কেডস এবং মাস্ক ও ক্যাপের পাশপাশি ব্যাকপ্যাকও থাকতে পারে তার সঙ্গে।
ঘরে তৈরি সময় বা দূর নিয়ন্ত্রিত গ্রেনেড- বোমা বা আইইডি এবং ছুরি বা চাপাতির মত অস্ত্রও জঙ্গিরা ব্যবহার করতে পারে।
হামলা ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, পুলিশ সদস্যদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানো, মেস-ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করা, পুলিশের গাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় না রাখা, অবাঞ্ছিত লোকজনকে পর্যবেক্ষণ করা, পুলিশের পোশাকে অপরিচিত কেউ প্রবেশ করছে কিনা, তা নিশ্চিত করা, কুইক রেসপন্স টিম গঠন এবং বিভিন্ন স্থাপনার নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত