মোহাম্মদ জুম্মান সিদ্দিকী নামের একজনকে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের জারি করা গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই গেজেট কেন বেআইনি হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
দুই আইনজীবীর করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। মোহাম্মদ জুম্মান সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
এর আগে হাইকোর্টের পৃথক চারটি বেঞ্চ গত ২১ ও ২৮ নভেম্বর এবং ১১ ও ১৫ ডিসেম্বর রিট আবেদনটির ওপর শুনানি গ্রহণে অপরাগতা প্রকাশ করেছিলেন। তবে সর্বশেষ গত ১৫ ডিসেম্বর বিচারপতি তারিক উল হাকিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনটি শুনতে সম্মতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে বুধবার আদেশ দেন আদালত।
পরে অনীক আর হক বলেন, আদালত রুল জারি করে ওই গেজেটের কার্যকারিতার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
ইশরাত হাসান বলেন, রুলে ওই গেজেট কেন বেআইনি হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। বার কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, হাইকোর্টের আজকের আদেশের ফলে তিনি আর আপাতত হাইকোর্টে ওকালতি করতে পারবেন না।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, জুম্মান সিদ্দিকী হাইকোর্ট বিভাগের এক বিচারপতির ছেলে। আইনে ডিগ্রিধারী জুম্মান সিদ্দিকী নিউজিল্যান্ডের হাইকোর্টের প্র্যাকটিশনার।
বাংলাদেশে আইনজীবী হিসেবে পেশা পরিচালনা করতে হলে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনের পর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট (আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত) পরীক্ষায় (এমসিকিউ-লিখিত-মৌখিক) উত্তীর্ণ হতে হয়।
কিন্তু কাউন্সিলের (বার কাউন্সিল অর্ডার অ্যান্ড রুলস ১৯৭২) অনুসারে বিদেশি হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করেন এমন ব্যক্তিরা বাংলাদেশের হাইকোর্টে সরাসরি আইনজীবী হিসেবে সরকারের দেওয়া গেজেটে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। আইনের এই সুযোগ নিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টার জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বার কাউন্সিল। এ অনুমতির গেজেট (বেসরকারি ব্যাক্তি এবং করপোরেশ কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে জারিকৃত বিজ্ঞাপন ও নোটিশ সমূহ) ৩১ অক্টোবর জারি করা হয়।
এই গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তিতে বার কাউন্সিলের বিধানও চ্যালেঞ্জ করেছেন।