ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১   সকাল ৮:১৭ 

সর্বশেষ সংবাদ

কৃষিখাতে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি, ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষতি সামালে ভর্তুকি হিসেবে কৃষকদের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে করণীয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এই তথ্য জানান।

মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ ও বিপণনে গুরুত্ব দিয়ে সরকার ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

“বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষকদের স্বার্থে সার, সেচ, ইক্ষুচাষসহ কৃষিখাতে ভর্তুকি বাবদ ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।”
করোনাভাইরাসের কারণে বোরো ধান কাটার শ্রমিকের সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হাওর অঞ্চলের ধান কাটার জন্য জরুরি ভিত্তিতে নতুন ১৮০টি কম্বাইন হারভেস্টার এবং ১৩৭টি রিপার সরবরাহের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
“হাওরে গমনেচ্ছুক শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সাবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক প্রভৃতি উপকরণ প্রদান, নিরাপদ যাতায়াতের জন্য আলাদা গাড়ি, নির্বিঘ্ন গমনাগমন, ধান কাটা স্থলে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে রাখার ব্যবস্থা ইত্যাদি কার্যক্রম চলছে।”

কৃষি শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাওরে যাওয়া শুরু করেছেন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, হাওরে ধান কাটায় কোনো সমস্যা হবে না।”
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষিখাতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এর সুদ ৪ শতাংশ হলেও কৃষিখাতে ৯ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকিসহ অন্যান্য প্রণোদনা বিবেচনায় নিলে এটি ‘অত্যন্ত ভালো’।
“এ প্রণোদনার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করে মৎস্য ও প্রাণি খাতসহ কৃষির সকল সেক্টরে সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব প্রণোদনার বাইরে কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষি পুনর্বাসনে ১২০ কোটি টাকা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষতিপূরণ ও সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদের জন্য ৫০ কোটি টাকা এবং ফসলে নতুন জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য প্রদর্শনী স্থাপন ও গ্রহণকরণ বাবদ ৭৫ কোটি টাকা ইতোমধ্যে বরাদ্দ দিয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও বীজ, সেচখাতে সহায়তা বাবদ ১৫০ কোটি টাকা এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে সার ও বীজ বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আউশ উৎপাদন নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সাধারণত প্রতি বছর ৩০ লাখ মেট্টিক টন আউশ ধান উৎপাদিত হয়। আসন্ন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা হল ৩৫ লাখ মেট্টিক টন।
“এজন্য আসন্ন আউশ মৌসুমে বিএডিসির সেচের রেট ৫০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সাড়ে ৬ হাজার মেট্টিক টন হাইব্রিড ও উফশি জাতের বীজ ইতোমধ্যে কৃষকদের বিতরণ করা হয়েছে।”
এছাড়া কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০০ কোটি টাকায় ৮০০টি কম্বাইন হারভেস্টার এবং ৪০০টি রিপারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
বাকি ১০০ কোটি টাকা দিয়ে সমপরিমাণ কৃষি যন্ত্রপাতি অচিরেই কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের সংকটকালীন সাধারণ ছুটির সময় কৃষি কার্যক্রম সক্রিয় রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
“তাদেরকে নিয়মিতভাবে মাঠে গিয়ে এই দুর্যোগময় অবস্থায় কৃষকের সাথে এবং কৃষকের পাশে থাকতে বলা হয়েছে। যারা কর্মস্থলে থাকবেন না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আরিফুর রহমান অপু ও মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল এবং বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম সভায় উপস্থিত ছিলেন। সূত্রঃ বিডি নিউজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত